স্টাফ রিপোর্টারঃ
বরগুনার তালতলীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি পরিত্যাক্ত ভবনের জরাজীর্ণ লোহার বে ও জানালার গ্রিলসহ অন্যান্য আসবাবপত্র টেন্ডার ছাড়াই বিক্রি করেছেন স্কুলটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। যে মালামাল বিক্রী হয়েছে তাতে যে অপরাধ হয় সেটা ব্যবস্থা নেওয়ার মত নয় বলছে উপজেলা শিক্ষা অফিস। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১০ নং উত্তর কড়ইবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ব্যবহার অনুপযোগি হওয়ায় কয়েক বছর বিদ্যালয় ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। এরপরে পাশেই একটি ভবন ছিলো সেটির পরিত্যক্ত ঘোষণা করে টেন্ডার দিয়ে বিক্রী করলেও আগের ভবনটি কোনো ধরণের টেন্ডার বা বিক্রী করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু গত ২১ ফেব্রুয়ারী দুপুরের দিকে স্কুলের জরাজীর্ণ ও পুরাতন মালামাল প্রকাশ্য নিলামের কথা থাকলেও তা না করে স্থানীয় শাহ-আলমের কাছে বিদ্যালয়ের সভাপতি আলীবন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মেনাজ উদ্দিন সিকদার ও প্রধান শিক্ষক শাহিদা বেগম জরাজীর্ণ লোহার বে ও জানালার গ্রিলসহ অন্যান্য মালামাল (কত কেজি তা জানা যায়নি) বিক্রী করে দেন। তবে কত টাকার মালামাল বিক্রী করা হয়েছে তা জানা যায়নি। তবে ১২ থেকে ১৫ মন হবে বলে জানান স্থানীয়রা।
ঐ মালামাল ক্রেতা শাহ-আলমের একান্তজন জাফর ফকির বলেন শাহ-আলম স্কুলের মালামাল ক্রয় করেছেন। সেই মালামাল আনার জন্য ২১ ফেব্রুয়ারী দুপুরের দিকে আমাকে সেখানে নিয়ে গেছে। দুই গাড়ীতে আনা হয়েছে। তবে কত কেজি মালামাল তা আমি জানিনা।
উত্তর কড়ইবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পিটিআই কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, পুরাতন স্কুলটি প্রায় ১২ থেকে ১৫ মন লোহার বে -গ্রিলসহ অন্যান্য মালামাল বিক্রী করেন বর্তমান সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। আমি পিটিআই কমিটির কাছে এ বিষয়ে কোনো কিছু জানায়নি। প্রকাশ্য নিলামের কথা থাকলেও তার কিছুই করেননি তারা। সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি করছি।
উত্তর কড়ইবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহিদা বেগম বলেন, মাত্র ৫ হাজার টাকার মালামাল বিক্রী করা হয়েছে। সে টাকা বিদ্যালয়ের কাজের জন্য ব্যবহার করা হবে।
উত্তর কড়ইবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মেনাজ উদ্দিন সিকদার বলেন, আমি কিছুই জানিনা।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শফিউল আলম বলেন, টেন্ডারছাড়া স্কুলের যে মালামাল বিক্রী করা হয়েছে সেটা ব্যবস্থা নেওয়ার মত কোনো অপরাধ নয়। তাই আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছিনা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বলে দেখি তারপরে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রাথামিক শিক্ষা অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, এক টাকার সরকারী মালামাল বিক্রীর জন্য টেন্ডার দিয়ে বিক্রী করতে হবে। তবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কেন এভাবে বলছে এ বিষয়ে আমি কোনো কিছু জানিনা। তবে তার সাথে কথা বলে জানানো যাবে।