আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ
আমতলী বকুলনেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির অপসারণ চেয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের নামে মিথ্যা ও গায়েবী ব্যানার টানানো হয়েছে। কিন্তু এ গায়েরী ব্যানার সম্পর্কে কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাকরা কিছুই জানেন না। তারা গায়েবী ব্যানারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে ব্যানার ছিড়ে ফেলেন এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের খুজে বের করে শাস্তির দাবী জানিয়েছেন ।
জানাগেছে, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ভালোই চলছিল আমতলী বকুলনেছা মহিলা কলেজের পাঠদান ও কার্যক্রম। ২০১০ সালে ফোরকান মিয়া বিএ পাশের জাল সার্টিফিকেট দিয়ে গোপনে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেন।এ সময়ে তার বিরুদ্ধে জাল সার্টিফিকেট ব্যবসা ও অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ উঠে। ২০১৩ সালে তার বিএ পাশের জাল সার্টিফিকের ধরা পরলে তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। গত জুলাই মাসে তথ্য গোপন করে নিজস্ব লোক দিয়ে এডহক গঠন করে এবং রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় এডহক কমিটি মোঃ ফোরকান মিয়াকে অবৈধভাবে অধ্যক্ষ হিসাবে পুর্ণবহাল করেন। এদিকে কমিটি গঠনের পরপরই জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় মোঃ ফোরকান মিয়ার বিএ পাশের জাল সার্টিফিকেট এবং পদত্যাগের বিষয়টি জেনে যান। পরে গত ২০ সেপ্টেম্বর জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ গোলাম সরোয়ার টুকুকে সভাপতি করে এডহক কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটির কার্যক্রমে বাঁধা হয়ে দাড়ান জাল সার্টিফেকেটধারী অধ্যক্ষ ফোরকান। ফোরকানের অপতৎপরতায় কলেজের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পরে। মঙ্গলবার গভীর রাতে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকের নাম ব্যবহার করে সভাপতির অপসারণ চেয়ে মিথ্যা ও গায়েবী ব্যানার টানানো হয়। বুধবার সকালে শিক্ষার্থীরা কলেজে গিয়ে ব্যানার দেখে হতবাক হয়ে যান। পরে তারা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তাৎক্ষনিক ব্যানার ছিড়ে ফেলেন। তারা বলেন, আমরা সভাপতির অপসারণ চাইবো কেন ? একটি কুচক্রিমহল কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের নাম ব্যবহার করে মিথ্যা ও গায়েবী ব্যানার টানিয়েছে। এ মিথ্যা ও গায়েবী ব্যানারের সাথে জড়িতদের খুজে বের হবে শাস্তি দাবী করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি বলেন, কলেজের ভিতরে সক্রিয় একটি জামায়াত চক্র রয়েছে। প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এই চক্রটি কলেজটি এক রকম কুক্ষিগত করে রেখেছেন এবং শুরু থেকেই বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকুর বিরোধিতা করে আসছে ।
কলেজের শিক্ষার্থী স্বর্ণা তালুকদার এ্যানি, তামান্না, লিমা, ফারজানা, জুলিয়া, কুলসুম, মিতু ও টুম্পা মুন্নি, তন্নি, ইমা ও কেয়া বলেন, আমরা সকালে কলেজে এসে শিক্ষার্থীদের নাম ব্যবহার করে সভাপতির অপসারণ দাবী করে মিথ্যা ও গায়েবী ব্যানার দেখতে পাই। আমাদের নাম ব্যবহার করে ব্যানার টানানো দেখে আমরা হতবাক হয়ে যাই। সাথে সাথে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাই। তারা আরো বলেন, আমাদের নাম ব্যবহার করে যারা মিথ্যা ও গায়েবী ব্যানার টানিয়েছেন তাদের শাস্তি দাবী করছি।
কলেজের অভিভাবক মোঃ রশির হাওলাদার, রাহাত তালুকদার, ফারুক মিয়া, শাহীন হাওলাদার ও জসিম মাস্টার বলেন, আমাদের নাম ব্যবহার করে যারা ব্যানার টানিয়েছে তারা নেহায়েত অন্যায় করেছে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবী করছি ।
জাল সার্টিফিকেটধারী অধ্যক্ষ মোঃ ফোরকান মিয়া মিথ্যা ও গায়েরী ব্যানারটি কলেজের বাহিরে টানানোর কথা স্বীকার করে বলেন, ব্যানার কে বা কারা টানিয়েছে তা আমার জানা নেই।
বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক কলেজের সভাপতি গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন, ব্যানার টানানোর বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। তবে সমাজের অনিয়ম-দুর্ণীতি ও জাল জালিয়াতির বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে বাঁধা বিপত্তি আসতেই পারেন। বাধা বিপত্তি মোকাবেলা করেই কাজ করতে হবে।