বরগুনায় বেতাগীতে হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ১০ টাকা কেজির চাল নিচ্ছেন চেয়ারম্যান

বিশেষ প্রতিবেদক, বরগুনাঃ

বরগুনায় বেতাগীতে হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ১০ টাকা কেজির চাল নিচ্ছেন সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবির খলিফা। প্রতিমাসে নিজেই স্বাক্ষর করে উত্তোলন করেছেন সুবিধাভোগী হতদরিদ্রের ১০ টাকা কেজির চাল। এ ছাড়াও হতদরিদ্রের চালের তালিকায় নাম রয়েছে চেয়ারম্যানের ছেলে ও বোনের। এ নিয়েও সমালোচনার মুখে চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির খলিফা।
চেয়ারম্যান চাল নেয়ার কথা স্বীকার করে জানান, একটা ইউনিয়ন চালাতে অনেক কিছু এদিক-ওদিক করতে হয়।
হতদরিদ্রের জন্য বরাদ্দকৃত ১০টাকা কেজি দরের চালের তালিকায় বেতাগী উপজেলার ২নম্বর বেতাগী সদর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমায়ন কবির খলিফা নয়-ছয় করেছেন। ডিলারের কাছে হস্তান্তর করা তালিকার ৮, ১১, ১২ ও ১৩ ক্রমিক নম্বরের ভুক্তভোগী জেসমিন আক্তার, সাবিনা ইয়াসমিন, রশিদ সিকদার ও মোসা. সিমা বেগমের তিনমাসের চাল চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবির নিজেই উত্তোলন করেছেন। চাল প্রাপ্ত হতদরিদ্র ব্যক্তির স্বাক্ষরের স্থানে রয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবিরের স্বাক্ষর। এ ছাড়া তালিকার ক্রমিক নম্বর ১০ এ রয়েছে ছেলে গোলাম শাহরিয়ার মনিরের নাম। অন্যদিকে ক্রমিক নম্বর ৯ এ বোন সাইদুন্নেছা বেগমের নাম।
ভুক্তভোগী জেসমিন আক্তার ও সিমা বেগম বলেন, প্রতিবারের মতো চাল আনতে গেলে বেতাগী সদর ইউনিয়নের ডিলার লাভলু জানান, আমাদের চাল চেয়ারম্যান নিয়ে গেছেন। প্রমাণ দেখতে চাইলে তিনি দেখান তালিকায় চেয়ারম্যান নিজেই স্বাক্ষর দিয়ে আমাদের চাল উত্তোলন করেছেন। নাম না প্রকাশের শর্তে আরো দুই  ভুক্তভোগী জানান, তাদের পরপর ৩ মাসের চাল চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেতাগী সদর ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য বলেন, চেয়ারম্যানের অনিয়মের শেষ নেই। তিনি ১০ টাকা কেজির চালে অনেক অনিয়ম করেছেন এবং বাহিরে বিক্রি করেছেন। এমনকি তার আপন বোনের বাড়ি অন্য ইউনিয়নে হওয়া সত্ত্বেও সদর ইউনিয়নের তালিকায় চালের নাম দিয়েছেন। চেয়ারম্যানের ছেলে মনিরের নামও রয়েছে ১০ টাকা কেজি চালের হতদরিদ্রের তালিকায়।
এ ব্যাপারে বেতাগী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো.হুমায়ূন কবির খলিফা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ চালাতে এদিক ওদিক করতে হয়। আর আমার বোন অসহায় তাই তার নাম দিয়েছি। আর আমার ছেলের নামের চাল উঠিয়ে অসহায় মানুষদের দেই। তালিকায় স্বাক্ষর আমিই দিয়েছি। দুই তিন মাস একটু সমস্যা হয়েছিল চাল বিতরণে পরে সব ঠিক করে দিয়েছি।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, হতদরিদ্রের বরাদ্দকৃত চালে কেউ অনিয়ম করলে ছাড় দেওয়া হবে না। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Facebook Comments Box
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225
  • Untitled post 11155
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225