করোনা এবং বঙ্গবন্ধু শীর্ষক প্রতিযোগিতায় সার্কের ৮টি দেশের মধ্যে সেরা বক্তা নির্বাচত হয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার আলিনগর ইউনিয়ন ও গ্রামের ছাত্র ইয়াশিন আলী। সার্কের ৮টি দেশের ২২জন প্রতিযোগীতার মধ্যে তিনি ১ম হয়েছে। ভারতের নয়াদিল্লির সার্ক ইউনিভার্সিটি অডিটোরিয়ামে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারি ইয়াশিন আলী সেরা বক্তা নির্বাচিত হয়ে ভারতের রাষ্ট্র্রপতি রামনাথ কোবিন্দ কাছে পুরস্কার তুলে নেন। তিনি উপজেলার আলিনগর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে। ইয়াশিনের এ কৃতিত্বে পিতামাতাসহ শিক্ষক,সহপাঠী ও এলাকাবাসী আনন্দ জোয়ারে ভাসছেন। এদিকে সেরা বক্তব্য নির্বাচিত হওয়ার গতকাল মঙ্গলবার তাঁর প্রতিষ্ঠান আলিনগর স্কুল ও কলেজ ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
জানা গেছে, দক্ষিণ এশিয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা সার্কের আয়োজন গত ২৩ জানুয়ারী ৮টি দেশের শিক্ষার্থীদের নিয়ে “করোনা এবং বঙ্গবন্ধু প্রতিভা” শীর্ষক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ইয়াশিন ২২ জন প্রতিযোগিকে হারিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে সেরা বক্তব্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি আলিনগর স্কুল ও কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দশম শ্রেনির ছাত্র। গোমস্তাপুর উপজেলার আলীনগর গ্রামের আনোয়ারুল ইসলাম ও মোসা. নাহার বানু বিউটির ৩ মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে সন্তান ইয়াসিন আলী সবার ছোট। বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই বক্তৃতা ও বির্তক প্রতিযোগিতায় পারদর্শী ইয়াসিন। নিজ স্কুলের সব প্রতিযোগিতাতেই তিনি শ্রেষ্ঠ বক্তা নির্বাচিত হয় মেধাবী এই ছাত্র ইয়াসিন। দেশের গন্ডি পেরিয়ে ৮ দেশের প্রতিযোগীদের মধ্যে ইয়াসিনের এই সাফল্যে খুশি তার পরিবার, সহপাঠী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ। এদিকে শিক্ষক,সহপাঠী, এলাকাবাসি তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
সার্কের শ্রেষ্ঠ বক্তা ইয়াসিন আলী বলেন, এই সাফল্যে তিনি ভীষণ খুশি। বর্হিবিশ্বে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি শ্রেষ্ঠ বক্তার পুরস্কার পাওয়া অনেক সম্মান ও আনন্দের। এই পুরস্কার পাওয়ায় দেশের প্রতি আরও দায়িত্ববোধ বেড়ে গেছে। এই অর্জনে অনেক ভালো লাগছে। আশা করি, আাগামীতে এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারব।
ইয়াসিনের বাবা আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তাঁর ছেলের এই কৃতিত্বে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছি। তার স্বপ্ন একজন বিচারক হওয়ার। আশা করি, সে এই স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হবে। আমরা চাই, দেশের উন্নয়নে সে নিজের সর্বোচ্চ মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে কাজ করুক। আমাদের ইচ্ছে, এভাবেই সারাবিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম ছড়িয়ে দিবে ইয়াসিন। এসময় সকলের কাছে ছেলের জন্য দোয়া চান তিনি।
আলীনগর স্কুল ও কলেজের সহকারী শিক্ষক মঞ্জুয়ারা খাতুন বলেন, ক্লাসের মেধাবী ছাত্র ইয়াসিন বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বক্তৃতা ও বির্তক প্রতিযোগিতায় পারদর্শী। প্রত্যেকবার স্কুলের প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ হয়। তবে এবার দেশের বাইরে, এমনকি ৮টি দেশের মধ্যে প্রতিযোগিতা করে শ্রেষ্ঠ হয়েছে। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতে নয়। সে পড়াশোনাতেও খুবই ভালো। সকল শিক্ষকবৃন্দ অত্যান্ত আনন্দিত হয়েছে। একটা পাড়া-গাঁয়ের স্কুল থেকে পড়াশোনা করে শ্রেষ্ঠ বক্তা হিসেবে ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করা অত্যান্ত সম্মানের।
এবিষয়ে গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান বলেন, দেশের গন্ডি পেরিয়ে ইয়াসিনের এমন সাফল্য অত্যান্ত সম্মানের। তাঁর সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে উপজেলা প্রশাসন সবসময় পাশে থাকবে। তাঁর সাফল্যের জন্য উপজেলা প্রশাসন উৎসাহ ও অভিনন্দন জানাবেন বলে তিনি জানান ।