স্টাফ রিপোর্টার
বরগুনার তালতলীতে চুক্তির পরিমান থেকে ২ হাজার টাকা কম দেয়ার কথা বলায় গর্ভবতী এক রোগীকে অপারেশনের কক্ষে নিয়ে অ্যানেস্থেসিয়া করার পরে ফেরত পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে তালতলী ইসলামী ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে।
বুধবার(২৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২ টায় ঔ গর্ভবতী নারী ও তার স্বজনরা এ অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধার দিকে তালতলী ইসলামী হাসপাতাল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সেলিনা বেগম (৩৫) নামের এক গর্ভবতী নারী শারীরিক চেকআপের জন্য আসেন। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক ডা.নুসরাত জাহান ঔ গর্ভবতী মহিলাকে দ্রুত সিজারের পরামর্শ দেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রথমে সিজারের জন্য মোটা অংক দাবী করেন। গর্ভবতী নারীর পরিবার গরীব হওয়ার কারণে দর কশাকশি করে সিজারের জন্য ১২ হাজার টাকায় চুক্তিতে ১০ হাজার টাকা নগদ দিলে রোগীকে ওটিতে নেয়া হয়।
অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গর্ভবতী নারীকে তিনটি অ্যানেস্থেসিয়া ইনজেকশন দেওয়া হয়। এতে সম্পূর্ণ অজ্ঞান না হলে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার মুহূর্তে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক পক্ষের মাসুম ফরাজী সিজার করতে বাধা দেন। তিনি বলেন ২ হাজার টাকা কম দিবে তারা। কম দিলে সিজার হবে না। পরে ওই নারীকে অসুস্থ অবস্থায় ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বের করে দিয়ে বলেন আপনারা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান।
পরে মুমূর্ষু অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে বরিশালের বেসরকারী একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে সিজার করান তারা।
তালতলী ইসলামী হাসপাতালে এমন অবহেলার কারণে সচেতন মহল তীব্র নিন্দা জানান। তারা বলেন রোগিদের সাথে এমন আচরণ তাদের নতুন নয়। বিভিন্ন সময়ে রোগিদের ও তার পরিবারের সাথে অমানবিক আচরণ করে থাকেন। এ ছাড়াও অতিরিক্ত টাকা নিয়ে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিচ্ছেন না। এই ঘটনার বিচার হওয়া দরকার। রোগিকে অপারেশন থিয়েটার নিয়ে অ্যানেস্থেসিয়া দিয়ে সেখান থেকে ফেরত খুব খারাপ বিষয়।
এ বিষয়ে সেলিনা বেগম বলেন, আমাকে প্রথমে তিনটা ইনজেকশন দেওয়া হলে আমি কিছুটা অজ্ঞান হই। পুরোপুরি হইনি। এ সময় দুই হাজার টাকা কমের কথা বলায় আমাকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়।
আমি বিচার চেয়ে থানায় ও ইউএনও’র কাছে অভিযোগ লিখেছি। জমা দিবো।
এবিষয় হাসপাতালের মালিক পক্ষের মাসুফ ফরাজী সাংবাদিকদের জানান, তিনি আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়নি প্রথম দেখায় রোগীর অবস্থা খারাপ মনে হওয়ায় তাকে সরকারি হাসপাতালে যেতে বলা হয়েছে।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন,এ বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহি অফিসার মোঃ কাওছার হোসেন,এ বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ কিছু বলেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরগুনা সিভিল সার্জন ডা.মো.ফজলুল হক বলেন,
সরকারি অনুমতি ছাড়া কোন অপারেশন করার অনুমতি নেই কোন প্রাইভেট হাসপাতালের, আবেদিত থাকলে তারও একটা মেয়াদ থাকে, আবেদন করে বছরের পর বছর পরে থাকবে তা হবেনা। আর ঐ রোগীর সাথে যা হয়েছে তা দুঃখ জনক,আমার কাছে কেউ অভিযোগ দিলে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তারপরো আমি বিষয়টির খোঁজ খবর নিচ্ছি।