শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫৩ পূর্বাহ্ন

তালতলীতে অবাধে রেনু পোনা নিধনের মহোৎসব, প্রশাসন নিরব

অনলাইন ডেস্ক / ১৬ শেয়ার
প্রকাশিত : শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার॥

বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন পায়রা নদীর মোহনাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে চলছে চিংড়ি মাছের রেনু পোনা নিধনের মহোৎসব। এর ফলে গড়ে প্রতিদিন ধ্বংস হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির লাখ লাখ মাছের পোনা। মৎস্য বিভাগ এসব নদ-নদীর রেনু পোনা আহরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হওয়া সত্বেও তা বন্ধে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছেন না স্থানীয় প্রশাসন। সরেজমিনে দেখা যায়, তালতলী উপজেলার নিদ্রারচর, তেতুলবাড়িয়া, জয়ালভাঙ্গা, ফকিরহাট, নিশানবাড়িয়া, পচাকোড়ালীয়া ও ছোটবগী এলাকায় প্রতিদিন কয়েক শত নারী-পুরুষ ও শিশুরা মশারি জালের মাধ্যমে বাগদা চিংড়ির রেনু শিকার করছে। বিশেষ এক ধরনের সাদা চামচের পাত্র থেকে বাগদা রেণু বাছাই করে অন্য পাত্রে মজুদ করছে। এক একটি বাগদার রেণু পোনা মহাজনের কাছে বিক্রি হয় ২ থেকে ৩ টাকায়, মহাজন বিক্রি করছেন ৬ থেকে ১০ টাকায়। এতে অনেকটা লাভজনক হওয়ায় জেলে পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশুরা ঝুকে পরছেন এ পেশায়। রেনু পোনা শিকারি জেলে আঃ মজিদ বলেন, সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রেণু সংগ্রহ করলে প্রতিদিন জন প্রতি ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করা যায়। বাগদা রেনু শিকারি শিশু তানিম বলেন, শুনছি, রেনু পোনা ধরা নিষেধ, কিন্তু কেউ কোন দিন আমগোরে বাধা দেয় নাই। বেশি লাভ হওয়ায় সারা দিন নদীতেই পইরড়া থাকি।

তালতলী উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে রেনু পোনাগুলো গভীর রাতে মিনিট্রাক যোগে বরিশালে ও ট্রলারে করে পাথরঘাটায় নিয়ে যান আড়ৎদাররা। সেখান থেকে খুলনা, বাগেরহাট, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয়। পায়রা নদী সহ উপজেলার তিন শতাধিক পয়েন্টে প্রায় ২০ হাজার জেলে প্রতিদিন এই বাগদা রেনু পোনা আহরণ করছেন। পাশাপাশি লাখ লাখ অন্য মাছের রেনু ও ডিম নিধন করছেন। তেঁতুলবাড়িয়া এলাকার অবৈধ বাগদা রেনু পোনা ব্যবসায়ী মোঃ বশির, ফকিরহাট বাজার সভাপতি মোঃ খালেক হাওলাদার, ছগির খলিফা, সালাম হাওলাদার, মজিবর ফরাজি, মোঃ রিপন ফকির, আরিফ শিকদার, জালাল খা, বাদল হাওলাদার, নাসির সিকদার, জসিম খা বলেন, বাগদা চিংড়ি আহরণ নিষিদ্ধ হলেও জেলেরা নদী থেকে ধরে আনে বলে আমরা কিনে রাখি। অবৈধ হলেও কি আর করুম। তাছাড়া নৌ-পুলিশ ও মৎস্য বিভাগ থানা পুলিশ তো এরসবই জানে।

এ বিষয়ে নিদ্রার নৌ-ফাড়ির ইনচার্জ আশরাফুল আলম বলেন, তবে বাগদা রেনু পোনার বিষয় আমি এখনো জানিনা। তবে কালবেলার সাংবাদিকের কাছে শুনেছি। খোজ খবর নিয়ে আমি দেখবো।

এবিষয় তালতলী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর বাইন বলেন, এরমধ্যে তিনটি অভিযান দেয়া হয়েছে। এক লক্ষ রেনু পোনা আটক করে পায়রা নদীর মোহনায় অবমুক্ত করেছি। আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। আশা করি আমাদের এই অভিযান চলমান থাকবে এবং আমরা এ অবৈধ রেনু আহরন অবশ্যই বন্ধ করতে পারবো।
তালতলী থানার (ওসি) শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, রেনু পোনা আমার নজরে পরেনি। যদি আমার নজরে পরে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, রেনু পোনা পুরোপরি অবৈধ আমরা কিছুদিন আগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি। যাদের পেয়েছি জেল দিয়েছি, জরিমানা করেছি এবং মালামাল জব্দ করা হয়েছে। প্রশাসন শক্ত ভুমিকায় রয়েছে। #####

Facebook Comments Box


এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
Developed by: Agragamihost.Com