মহীয়সী নারী মাহমুদা সবুজকে দৈনিক টেলিগ্রামের সন্মাননা প্রদান

পাবনার আত্রাই নদী বিধৌত চরাঞ্চলের সহ আশেপাশের এলাকার আলোকবর্তিতা ও  করোনায় এলাকায় ১০০ প্লাস গ্রপের মাধ্যমে বিশেষ ভূমিকা রাখায়  তাসকিনা সিন্থী চ্যারিটি ফাউন্ডেশন (টিএসসিএফ)  এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও দৈনিক টেলিগ্রাম পত্রিকার সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি মাহমুদা সবুজকে শুভেচ্ছা স্মারক দিয়ে সন্মাননা জানিয়েছে টেলিগ্রাম পরিবার।

 

শুক্রবার বিকেলে তার বাসভবনে এ স্মারক তুলে দেন দৈনিক টেলিগ্রাম পত্রিকার সম্পাদক ও মানিকগঞ্জ চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ড্রাষ্টির পরিচালক শহিদুল  ইসলাম সুজন।এ সময় তাসকিনা সিন্থী চ্যারিটি ফাউন্ডেশন (টিএসসিএফ)  এর পরিচালনা পরিষদের কর্মকর্তাবৃন্দ,সিনথী পাঠশালার শিক্ষক ও দৈনিক টেলিগ্রামের সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

 

নূন্যতম প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহনের ও সুযোগ হয়নি অনেকের। স্থানীয় মহীয়সী নারী মাহমুদা সবুজ গ্রামের বাসিন্দাদেরকে আলোকিত করতে প্রায় ১ যুগ পূর্বে অক্লান্ত পরিশ্রম দিয়ে নিজ বাড়িতে ছোট একটি লাইব্রেরি চালুর মাধ্যমে প্রতিষ্টা করেন তাসকিনা সিন্থী চ্যারিটি ফাউন্ডেশন (টিএসসিএফ) ।২০১৯ সালে  সংগঠনটি একটি অরাজনৈতিক, অলাভজনক ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকারি অনুমোদন লাভ করে। সংগঠনটির অন্যতম প্রতিষ্ঠান সিনথী পাঠশালা।

 

ব্যতিক্রমধর্মী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সালে শ্যামপুরটাটি গ্রামে ৬ একর জায়গার উপর যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে স্কুলটিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩৩০।এছাড়া শিক্ষক,কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে ৩০ জন।

 

প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মাহমুদা সবুজ যিনি একাধারে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারপার্সন এবং প্রতিষ্ঠাতা। মাহমুদা সবুজ সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো:সবুজ উদ্দিন খানের সহধর্মীনি। টিএসসিএফ পরিচালনা পরিষদের রয়েছে একদল সেচ্ছাসেবী, যারা প্রতিনিয়ত নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

 

অনেকগুলো উদ্দেশ্য নিয়ে এই ফাউন্ডেশনের পথচলা শুরু, এর মধ্যে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, মানসম্পন্ন শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ণ, প্রয়োগ ভিত্তিক প্রশিক্ষণ এবং স্ব-কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরী অন্যতম। টিএসসিএফ এর কর্মীরা এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করছে।

 

সেই ভাবনা ও স্বপ্ন থেকেই একটি সুন্দর সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে নিজ কন্যার নামে প্রতিষ্ঠাকরেন তাসকিনা সিন্থী চ্যারিটি ফাউন্ডেশন (টিএসসিএফ) । শুরু হয় সমাজে শিক্ষার আলো ছড়ানো।

 

চলমান কার্যক্রম

 

সিনথী পাঠশালা : ২০১৭ যাত্রা শুরু করে ২৫০ শিক্ষার্থী নিয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান চলছে।  ২০২২ সাল নাগাদ এই সংখ্যা ৫০০তে উন্নীত হবে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে কলেজ এর কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে আশা সংগঠকদের।

 

সিনথী পাঠাগার : একটি দ্রত বর্ধমান গ্রন্থাগার। পাঠক চাহিদার কথা ভেবে বর্তমানে এখানে এক হাজারেরও বেশি বিভিন্ন ধরনের বই সংগ্রহে রয়েছে যাথেকে সকল প্রকার পাঠকের চাহিদাই পুরন হবে।

 

সিনথী পাঠচক্র :স্কুলের নিয়মিত ক্লাস শেষে সন্ধায় শিক্ষার্থীরা যেন উপযুক্ত পরিবেশে আরও বেশি জ্ঞান চর্চা করতে পারে সেই লক্ষ্য নিয়েই এই কর্মসূচী শুরু হয়েছে। এ জন্য রয়েছে দুটি কক্ষ এবং নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য একটি আইপিএস। কয়েক জন শিক্ষক নিঃস্বার্থভাবে ১৫০ অধিক শিক্ষার্থীদের পাঠদানের মাধ্যমে এই কর্মসূচীতে সহায়তা করছেন।

 

সিনথী ১০০+

 

সমাজের উদ্বেগ জনক এবং সংবেদনশীল সমস্যা স্বম্পর্কে স্থানীয় জনগনের মধ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। সিনথী ১০০+ এর ধারনাটি হলো, সমাজের ১০০+ টি সমস্যা সণাক্ত করা এবং ১০০+ স্বেচ্ছাসেবকে এই সমস্যা গুলো মোকাবেলায় যুক্ত করা। এর মধ্যে বয়ঃসন্ধীকালীন মানসিক পরিবর্তন ও বয়ঃসন্ধীর প্রভাব, পরিবেশ দূষণ ইত্যাদি কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

 

ভবিষ্যত পরিকল্পনা

 

সিনথী অভয়ারণ্য

এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরিবেশে পাখিদের বাসা তৈরী এবং সেখানে নির্বিঘেœ বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা হবে।

 

সিনথী বাড়ী

অসহায় প্রবীণদের জন্যে বাসস্থানের ব্যাবস্থা করা এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। সিনথী বাড়ীর প্রত্যেক সদস্যদের জন্য বন্ধুত্ব পূর্ন এবং মর্যাদাশীল পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।

 

সম্প্রতি স্কুলটি পরিদর্শনে এসেছিলেন ইউএস বাংলা এয়ারলাইসেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন।তিনি বলেন, মাহমুদা সবুজ একজন মহীয়সী নারী। তার এই উদ্যোগ প্রসংশনীয়।আমি তাকে বর্তমান সময়ের বেগম রোকেয়া মনে করি। তাস্কীনা সিন্থী চ্যারিটি ফাউন্ডেশন (টি.এস.সি.এফ) সমাজের সকল অন্ধকার দূর করবে আমি সেই প্রত্যাশাই করছি।

তাস্কীনা সিন্থী চ্যারিটি ফাউন্ডেশন (টি.এস.সি.এফ) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদা সবুজ বলেন, বর্তমান সরকারের লক্ষ্য ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশেপরিণত করা। আমরা ও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই লক্ষ্য অর্জন শুধু সময়ের ব্যাপার। একটি উন্নত দেশ গঠনে টিএসসিএফ সব সময় সরকারকে সাহায্য করে যেতে চায়।

 

সরকারের নগরায়ণের পরিকল্পনা গ্রাম হবে শহর প্রকল্পকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে টিএসসিএফ এমন একটি অঞ্চলকে বেছে নিয়েছে যেখানে শিশুরা এখনও পড়াশোনা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। টিএসসিএফ এই সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাদেরকে বিভিন্ন সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি দক্ষ করে তুলতে চায়। কারণ দক্ষ জনশক্তি ছাড়া সত্যিকারের উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়া অসম্ভব। আমরা মনে করি আমাদের এই প্রয়াস সরকারের লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে।

 

 

Facebook Comments Box
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225
  • Untitled post 11155
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225