, , , , , , ,

এএসপি পদ মর্যাদার কর্মকর্তাদের ‘ওসির দায়িত্ব’ দিতে দুদকের সুপারিশ

সহকারী পুলিশ সুপার বা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। উপজেলা পর্যায়ের অধিকাংশ দপ্তরেই বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। এর প্রেক্ষাপটে এই সুপারিশ করেছে দুদক।

দুদকের সুপারিশে মন্তব্য করা হয়, থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্ব পালন করেন পুলিশের পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তারা। ফলে সাধারণ মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা পায় না।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ২০১৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করা হয়। দুদকের পক্ষ থেকে প্রতিবেদনটি রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সাংবাদিকদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি মতবিনিময় করেন দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে সাজার হার ৩৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭৭ শতাংশে পৌঁছেছে। কিন্তু সাজার এই হারে দুদক সন্তুষ্ট নয়। দুদক প্রত্যাশা করে, সাজার হার শতভাগ হবে।

বার্ষিক প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্টভাবে ১৪টি খাত বা বিষয় ছাড়াও আরও ৯টি ইস্যু বা খাতভিত্তিক সুপারিশ করেছে দুদক। পাশাপাশি সরকারি দপ্তর ও সেবা সংস্থাগুলোর দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করে সেগুলো প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট সুপারিশও করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে স্থায়ী সিভিল সার্ভিস সংস্কার কমিশন গঠন, আয়কর, কাস্টমস, ভ্যাটসংক্রান্ত, স্বাস্থ্য খাত, সড়কে যানবাহন ব্যবস্থাপনা, ওষুধশিল্প, নদী দখল, নিষিদ্ধ পলিথিনের আগ্রাসন, দুর্নীতিমুক্ত ভূমি রেজিস্ট্রেশন, ইটভাটা স্থাপনসংক্রান্ত, দীর্ঘমেয়াদি নৈতিকতার বিকাশে বিএনসিসি স্কাউটিং ও গার্লস গাইডের কার্যক্রম, সরকারি পরিষেবা মধ্যস্বত্বভোগী, ওয়াসা, ন্যায়পাল নিয়োগ, পরীক্ষার মাধ্যমে ৯ম গ্রেড থেকে তদূর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পদোন্নতির সুপারিশ।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিবেদনে ২০১৬ সাল থেকে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে দুদক বিভিন্ন সুপারিশ করেছে। কিন্তু এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগগুলো তেমন কার্যক্রম পরিচালনা করেনি। যদিও কমিশন মনে করে, তাদের সুপারিশ স্বতঃসিদ্ধ কোনো বিষয় নয়, তবে এ জাতীয় সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হলে অনিয়ম-দুর্নীতির পথ কিছুটা হলেও কঠিন হয়। তবে দুদক এবারের প্রতিবেদনে বলেছে, যেহেতু মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ দুদক-সংক্রান্ত বিষয়াবলি ও আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় সাধনের দায়িত্বপ্রাপ্ত। তাই এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন ও পরীক্ষণের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগই উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ।

প্রতিবেদনে দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশের লিজিং কোম্পানি, নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে বহুমাত্রিক দুর্নীতি ঘটেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া অর্থের উৎস বাধ্যতামূলকভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করা সমীচীন। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা বা পরিপত্র জারি করার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।

এ ছাড়া শিক্ষার মান উন্নয়নে পাস নম্বর ৩৩ থেকে ৫০ শতাংশে উন্নীত করার পাশাপাশি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে দুদক।

Facebook Comments Box
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225
  • Untitled post 11155
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225