আমতলীতে অধ্যক্ষের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন দাখিল পরীক্ষার্থীদের

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।

আমতলী বন্দর হোসাইনিয়া ফাজিল মাদ্রসার অধ্যক্ষ মো. ইউনুচ আলীর বিচার চেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটায় মাদ্রাসার সামনের সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এবছর অনুষ্ঠিত দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহনকারী ৫৫ শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, সারাদেশে চলমান দাখিল (এসএসসি) পরীক্ষায় আমতলী বন্দর হোসাইনিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে এ বছর ৫৫ শিক্ষার্থী অংশগ্রহন করেন। গতকাল ১৭ মে কৃষি শিক্ষা (৪র্থ) বিষয় পরীক্ষা দিতে আসেন পরীক্ষার্থীরা। হল কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার্থীদের বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ের প্রশ্নপত্র দেন। পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র দেখে বিচলিত হয়ে যান। তারা পড়াশুনা করেছে কৃষি শিক্ষা বিষয়ে প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়ের। এতে বিপাকে পড়ে যায় কৃষি শিক্ষা বিষয় পড়াশুনা করা পরীক্ষার্থীরা।

পরীক্ষার্থী মোঃ সজিব মৃধা বলেন, ১৭-০৫-২০২৩ (বুধবার) কৃষি শিক্ষা (৪র্থ) বিষয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা হলে আসি। পরীক্ষার প্রশ্ন পত্র দেখি বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়। আমরা যে বিষয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেই নাই সে বিষয় পরীক্ষা দিবো কিভাবে। বিষয়টি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা মাদ্রাসার অধ্যক্ষর ভুল হয়েছে বলে বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ে পরীক্ষা দিতে পরীক্ষার্থীদের অনুরোধ করেন।

ভুক্তভোগী একাধিক পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষর ভুলের জন্য আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। একটি নতুন বিষয়ে শুধু নাম লিখে পরীক্ষা দিয়ে এসে এখন অনেক টেনশনে আছি। দশ বছরের সাধনা একদিনে শেষ হয়ে গেছে। আমরা ভবিষ্যতে ভালো কোনো কলেজে ভর্তি হতে পারবো না। আমাদের ভবিষ্যতের দায়ভার কে নেবে? আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।

শিক্ষার্থীদের সুত্রে আরো জানা যায়, মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মো. ইউনুচ আলী পরীক্ষার্থীদের রেজিষ্ট্রেশন কার্ড প্রবেশ পত্রের সাথে সরবরাহ করেছেন। পরীক্ষার ফরম ফিলাপের পূর্বে শিক্ষার্থীরা রেজিষ্টেশন কার্ড অধ্যক্ষের কাছে একাধিকবার চেয়েছে। কিন্তু অধ্যক্ষ পরীক্ষার্থীদের রেজিষ্ট্রেশন কাড দেন নাই বলেও তারা জানান।

পরীক্ষার্থী ফাতেমা. আয়শা, তাসনিম তানহা, আবিদা বলেন পরীক্ষার পেপারে শুধু নাম লিখে এসেছি। আমরা কোন ভাল কলেজে ভর্তি হতে পারবোনা। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।

অপর পরীক্ষার্থী মাহমুদ. হাবিুল্লাহ,মহিউদ্দিন. আশরাফুল, আবু তাহেরসহ একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, মাদ্রাসার অধ্যক্ষের কারনে আজ আমরা ও আমাদের পরিবার মহাদুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে গেছি। ভাল কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারবোনা। আমরা সঠিক বিচারচাই প্রশাসনের কাছে।

মাদ্রসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. ইউনুচ আলীর মুঠোফোনে এবিষয়ে জানার জন্য একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

মাদ্রাসার সহকারী হল সচিব মাওলানা আনোয়ার হোসেন বলেন রেজিষ্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশ পত্র অনুযায়ী পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়েছে। এ ভুল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের। পরীক্ষার জন্য গঠিত হল কমিটির নয়।

মাদ্রাসার উপ- অধ্যক্ষ মাওলানা ইউছুফ আলী বলেন, এটা আমাদের ভুল হয়ে গেছে। আমরা পরীক্ষার্থীদের জন্য দোয়া করছি তারা ভাল রেজাল্ট করবে।

আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জিয়া উল হক মিলন বলেন, রেজিষ্টেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র অনুযায়ী প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়েছে। মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আশ্রাফুল আলম মুঠোফোনে বলেন, পরীক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তাদের অভিযোগ শিক্ষা মন্ত্রনালয়, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও বরগুনা জেলা প্রশসাক বরাবর পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Hk

Facebook Comments Box
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225
  • Untitled post 11155
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225