, , , ,

স্কুল কলেজ বন্ধ,যশোর জেলার অধিকাংশ ছেলে-মেয়েরা এখন ফ্রী ফায়ার, পাবজি গেমেস এ আসক্তি। আগ্রাসী মনোভাব সৃষ্টি

মোঃ নজরুল ইসলাম বিশেষ প্রতিনিধিঃ

সুদীর্ঘ ১৫-১৬ মাস ধরে করোনা কালীন সময়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে ভার্সিটি পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে আছে।
এই সময় টা নিতান্তই কোন ছোট একটি সময় নয়, সুদীর্ঘ ১বছর ৩-৪ মাস সময়। এত বড় একটি সময় কেটে গেলো। ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা থেকে সম্পুর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
যদি মাঝে এসাইনমেন্ট নামের শিক্ষায় মনোযোগী করার সাময়িক প্রচেষ্টা চলছে, তবে এই সামান্য প্রচেষ্টায় কোন প্রকার উপকার হচ্ছে বলে ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকগন মনে করেন না।

অনেক সম্মানিত শিক্ষক গণ মনে করেন, ছাত্র-ছাত্রীরা যেভাবে শিক্ষা ও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, সেখান থেকে তাদেরকে ফিরিয়ে আনতে হলে অনেকটা সময় সাপেক্ষ ও কষ্ট সাধ্য হবে।

একজন সম্মানিত শিক্ষক মহদ্বয় তো বলেই বসলেন, পাবজি এবং ফ্রি ফায়ার বাচ্চাদের মনোযোগ কেড়ে নিয়েছে। বাচ্চাদের মাঝে আগ্রাসী মনোভাব সৃষ্টি করছে।
তারা মাবসিকভাবে বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। বাচ্চারা গেমের নেশায় ঠিকভাবে খাইতে চায় না, মুরুব্বিদের কথা শুনতে চায় না।
কখনও গেম খেলার ক্ষেত্রে বাধা দিলে, শিশু-কিশোরেরা আগ্রাসী মনোভাব প্রকাশ করে, অসভ্য ভাষা ব্যবহার করে, অনেক সময় বাবা-মায়ের সাথেও কলহ পূর্ণ আচরণ করে।

সচেতন অভিভাবকগণ মনে করেন, এখনই যদি শিশু-কিশোরদের এই গেইমের আসক্তি থেকে ফিরিয়ে আনা না হয়, তাহলে হয়তো এক সময় অনেক তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অত্যন্ত সংকট ময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।
এই শিশু-কিশোর গুলো সকালে ঘুম থেকে মোবাইল ফোন টা হাতে নিয়ে গেইম খেলা শুরু করে, খাওয়ার সময়ের তাদেরকে পাওয়া যায় না। এরা গেইমের নেশায় গোসল খাওয়া, পড়াশোনা, অন্যান্য দায় দায়িত্ব, নিয়মানুবর্তিতা, কোন কিছুর প্রতি তাদের খেয়াল নেই।।
স্কুল কলেজ বন্ধ থাকার কারনে অনেক অভিভাবক মনে করেন, যেহেতু তাদের কাজ নেই অর্থাৎ স্কুল কলেজ খোলা নেই, তাহলে তারা ঘরে বসে বসে কি করব। এতটা দ্বীর্ঘ সময় কাটানোর জন্য তারা গেইমের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। শিশু-কিশোরদের মতে, তাদের এই লম্বা সময় টি কাটানোর জন্য উত্তম মাধ্যম হলো ফ্রি- ফায়ার এবং পাবজি খেলা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করা।

শহরে ও গ্রামে শিশু-কিশোরগুলো জড়সড় হয়ে দলবদ্ধ ভাবে এক সাথে গেইম খেলা শুরু করে।
এর আগেও দেখা গেছে একাধিক জনকে এই ফ্রি-ফায়ার এবং পাবজি খেলার কারনে আত্মহত্যা করেছে। তারা এতটাই আসক্ত হয়ে পড়েছে যে, নিজের জীবন টার চেয়েও তাদের নিকট গেইমের গুরুত্ব বেশিদিচ্ছে বর্তমানে।

সচেতন অভিভাবক গণ আশঙ্কা করেন, এভাবে চলতে থাকলে সমাজের মধ্যে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে। তাদের সন্তানেরা নষ্ট হওয়ার পর্যায়ে চলে যাবে। শিশু-কিশোরদের মানসিক শান্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
একজন সম্মানিতা মা জানান, সন্তানেরা এই খেলাগুলোতে এতটাই আসক্ত হয়ে পড়েছে যে, ঘুমের মাঝেও তারা কথা বলে। তাদের ঘুমের ঘোরে উচ্চারিত শব্দ গুলো হলো, মার মার গুলি কর, সামনে এ্যানেমি, এক জায়গায় দাড়িয়ে থেকো না, তাহলে পিছন থেকে মেরে দিবে।
নুব নুব নুব, লোল লোল লোল ইত্যাদি অপ্রয়োজনীয় শব্দ ঘুমের মাঝেও তারা বলে যাচ্ছে।

সর্বশেষ কথা, সকল সচেতন মহল ও সচেতন অভিভাবক গণের প্রাণের দাবি, যদি শিশু-কিশোরদের ধ্বংসের পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে হয়, তাহলে অবিলম্বে স্কুল কলেজ সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া উচিৎ। বাচ্চারা আবার স্কুলের নিয়ম শৃঙ্খলায় আবদ্ধ হলে, তবেই তাদের নিকট থেকে মোবাইল ফোন এবং গেইম আসক্তি সর্বনিম্ন পর্যায়ে আনা সম্ভব হবে। নিয়মের বেড়াজালে বন্ধ করে রাখতে পারলেই কেবল মাত্র সামাজিক অবক্ষয়ের হাত থেকে শিশু-কিশোরদের রক্ষা করা সম্ভব হবে।
কিছু কিছু শিক্ষক মন্ডলীরা বলেন, এই এক বছর বা তার অধিক সময়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় যে ক্ষতি হয়েছে তা পুরণ করতে কমপক্ষে ৫ (পাঁচ) বছর কেটে যাবে। এই অমনোযোগী শিশু-কিশোরদের মনোযোগী করে গড়ে তোলা কতটুকু সম্ভব হবে সেটাই এখন সঙ্কার বিষয়।
শিক্ষক মন্ডলীয় বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো যত দ্রুত সম্ভব খুলে দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থার পুর্ণ কার্যক্রম পরিচালনা করা উচিৎ।

Facebook Comments Box
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225
  • Untitled post 11155
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225