, , , ,

ঝালকাঠিতে মাঝ নদীতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা অভিযান -১০ বরগুনা গামী লঞ্চে আগুন , ৩৯ যাত্রীর লাশ উদ্ধার, নৌ-প্রতিমন্ত্রী’র ঘটনাস্থল পরিদর্শন

ঝালকাঠি প্রতিনিধি:

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনা গামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় বিকাল ৪ টা পর্যন্ত ৪১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় দগ্ধ শতাধিক ও নিখোঁজ রয়েছেন ৪৬জন। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৬জন,বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৬২জন,ঢাকা পাঠানো হয়েছে ৮জন। তবে এখন পর্যন্ত হতাহতদের নাম-পরিচয় পাওয়া জানাযায়নি।

২৪/১২/২০২১ইং তারিখ শুক্রবার রাত ৩টার দিকে সুগন্ধা নদীর দিয়াকুল নামক এলাকায় ঢাকা থেকে বরগুনা গামী লঞ্চটিতে আগুন লাগে। এক সূত্রে জানা যায়, লঞ্চটির ইঞ্জিন কক্ষ থেকে আগুনের সূত্র পাত হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

এ খবর পেয়ে বরিশাল, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠির কোস্ট গার্ডসহ ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট উদ্ধার কাজ করছেন।

বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক কামাল হোসেন ভূঁইয়া এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

খবর পেয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বিকাল তিনটায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জন প্রতি নিহত পরিবারকে দেড়লাখ টাকা ও দাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষনা দেন। এবং অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসার সকল ব্যায় সরকার বহন করবে বলে প্রতিমন্ত্রী জানান।

এসময় অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিবকে প্রধান করে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি কে আগামী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান ।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর অগ্নিকান্ডের প্রকৃত কারন উদঘাটনের পর র্দূঘটনার জন্য দায়ীকে বা কারো দায়িত্বে অবহেলা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে জেলা প্রশাসক মোঃ জোহর আলী জানায়, দূর্ঘটনার কারন অনুসন্ধানে অতিরিক্ত জেলা প্রসাশক কে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্তটিম গঠন করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত লাশ স্বজনদের শনাক্তের জন্য পৌর মিনিপার্কে রাখার পর এ পর্যন্ত ৬ জনকে শনাক্ত করেছে।

হাজার খানেক যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি ঢাকা থেকে বরগুনা যাচ্ছিল। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে থাকা অবস্থায় লঞ্চটিতে আগুন লাগে। লঞ্চের একাধিক যাত্রী জানান, রাত ৩টার দিকে লঞ্চের ইঞ্জিন রুমে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে। এসময় লঞ্চে বেশ কয়েকজন যাত্রী দগ্ধ হন। প্রাণে বাঁচতে অনেক যাত্রীই নদীতে ঝাঁপ দেন।সাইদুর নামের এক যাত্রী জানান, ‘রাতে ঢাকা থেকে বরগুনা ফিরছিলাম। লঞ্চটি ঝালকাঠি এলাকায় পৌঁছালেই ঞ্জিন রুমে আগুন লেগে যায়। এরপর সে আগুন পুরো লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে। অসংখ্য মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়। প্রাণে বাঁচতে নদীতে ঝাপ দেন অনেক যাত্রী। নদী পাড়ে অপেক্ষায় থাকা আমেনা খাতুন জানান, ‘তার ভাই ঢাকা থেকে এ লঞ্চে রওনা দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাচ্ছিনা। আমার ভাইয়ের সন্ধান চাই।’তবে লঞ্চের কেবিন গুলোতে অনেক মৃত্যু যাত্রীদের হাড় ও মাথার খুলি দেখা গেছে।
এদিকে চলন্ত লঞ্চে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারিহয়ে উঠেছে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর তীর। সকাল থেকে নদীতীরের গাবখান ধানসিঁড়ি এলাকায় অগ্নিদগ্ধদের স্বজনরা ভিড় করেন।লঞ্চটিকে বর্তমানে ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউড়ি সাইক্লোন শেল্টারের পাশে (বিষখালী নদীর তীরে) নোঙর করা হয়েছে।

Facebook Comments Box
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225
  • Untitled post 11155
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225