উপ-সচিরে স্বাক্ষর জাল করে চাকুরীর মেয়াদ বৃদ্ধি! দুই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ

আমতলী (বরগুনা) সংবাদদাতাঃ
বেসরকারী মাধ্যমিক-০২ শাখার উপ সচিব মোঃ আনোয়ারুল হকের স্বাক্ষর জাল করে প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে দুই বছর চাকুরীর মেয়াদ বৃদ্ধির অভিযোগ উঠেছে আমতলীর দুই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তদন্তে সত্যতা প্রমানিক হওয়ায় বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মোঃ রফিকুল ইসলাম খাঁন চলাভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহ জাহান করিব ও পুর্ব চিলা রহমানিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এন আর হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করেছেন।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহজাহান কবির ও পুর্বচিলা রহমানিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এন আর হুমায়ুন কবির এমপিও নীতিমালা অনুসারে ২০২১ সালে ষাট বছর পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি বে-সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রজ্ঞাপিত ২০২১ সালের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা এর ১১.১১ ধারা মোতাবেক পরবর্তী দুই বছর চাকুরীর মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য রেজুলেশন করেন। ওই নীতিমালায় উল্লেখ আছে চাকুরীর মেয়াদ বৃদ্ধি করতে সরকারের পুর্ব অনুমোদন গ্রহন করতে হবে। কিন্তু ওই দুই প্রধান শিক্ষক প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের বেসরকারী মাধ্যমিক-০২ শাখার উপ-সচিব আনোয়ারুল হকের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া অনুমিত পত্র তৈরি করেছেন। ওই অনুমতি পত্রের আলোকে তাদের চাকুরীর মেয়াদ দুই বছর বর্ধিতকরণ করা হয়। এতে ওই দুই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে বহাল তবিয়াতে আছেন। অবৈধভাবে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন কালে বিদ্যালয়ের লক্ষ লক্ষ টাকা তারা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ শিক্ষকদের।
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপ সচিবের স্বাক্ষর জাল মর্মে আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু হানিফ মিয়া লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মোঃ রফিকুল ইসলাম খান তদন্ত করেন। তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিবের স্বাক্ষর জাল করে পত্র ইস্যুর ঘটনার সত্যতা পান। ওই তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে দুই প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহজাহান কবির ও এনআর হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করেন।
চালাভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহজাহান কবির বলেন, পুর্ব চিলা রহমানিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ রেজাউল করিম ফরিদ প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিবের স্বাক্ষর জাল করে চাকুরীর মেয়াদ বৃদ্ধির পত্র ইস্যু করেছেন। আমি প্রতারনার স্বীকার হয়েছি।
পুর্ব চিলা রহমানিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ রেজাউল করিম ফরিদ বলেন, আমার মান ক্ষুন্ন করতে চলাভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিথ্যা অপবাদ দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, তিনিই উপ সচিবের স্বাক্ষর জাল করেছেন।
পুর্ব চিলা রহমানিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এন আর হুমায়ুর কবির বলেন, আমি পত্র পাওয়ার সাথে সাথে প্রধান শিক্ষক পদ ছেড়ে দেব। কিন্তু তিনি উপ-সচিরে স্বাক্ষর জালের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
পুর্ব চিলা রহমানিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি মোঃ তরিকুল ইসলাম জুয়েল বলেন, চিঠি পাওয়া মাত্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষা অফিসার মোঃ জিয়া উদ্দিন মিলন বলেন, বিষয়টি শুনেছি কিন্তু চিঠি পাইনি। চিঠি পেলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, ওই দুই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপ-সচিবের স্বাক্ষর জাল করে চাকুরীর মেয়াদ বৃদ্ধি করার সত্যতা পাওয়ায় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পত্র দেয়া হয়েছে।

Facebook Comments Box
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225
  • Untitled post 11155
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225