মোঃ নজরুল ইসলাম বিশেষ প্রতিনিধিঃ
তিনদিনেও সমাধান হলো না পেট্রাপোল বন্দরের ধর্মঘটের।
বন্দরে প্রবেশ নিয়ে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ ও সীমান্তরক্ষী বিএসএফের সঙ্গে পণ্য পরিবহনকারী ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ীদের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব নিরসন না হওয়ায় তৃতীয় দিনের মতো অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চলছে। বেনাপোলের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে চলছে এই ধর্মঘট।
পেট্রাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে সম্প্রতি সীমান্তে জারি করা হয়েছে নতুন কিছু বিধি-নিষেধ। আর তাতেই সমস্যা তৈরি হচ্ছে রপ্তানি বাণিজ্যে। দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নে সীমান্তরক্ষী বাহিনী ভারতের ট্রাকচালকদের সবরকম সঠিক কাগজপত্র ছাড়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। আর তারই প্রতিবাদে সোমবার (৩১ জানুয়ারি) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাণিজ্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। দাবি না মানা পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
‘ট্রাক তল্লাশির নামে অত্যাচার চালাচ্ছে বিএসএফ। চালক, মালিক এবং ক্লিয়ারিং এজেন্টদের নাজেহাল করা হচ্ছে। পাশাপাশি, বন্দর কর্তৃপক্ষ বন্দরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি ও নানাভাবে জুলুম চালাচ্ছেন’- এমনই অভিযোগ তুলে পেট্রাপোল স্থলবন্দরে বিক্ষোভ করে তারা। বনগাঁ গুডস ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয় আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। তাদের সমর্থন দেয় ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন, বনগাঁ নব মালিক সমিতি, বনগাঁ মোটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, সীমান্ত পরিবহন মালিক সমিতি, শ্রমিক সংগঠনসহ কয়েকটি সংগঠন।
তবে দুই পক্ষই তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকায় টানা বন্ধের কবলে পড়েছে বাণিজ্য। এর আগেও গত সপ্তাহে একই দাবিতে ৩ দিন বন্ধ ছিল আমদানি বাণিজ্য। ভারত অংশে ধর্মঘট বা কর্মবিরতিতে বছরের বড় একটি সময় বন্ধের কবলে পড়ে বাণিজ্য।
পেট্রাপোল সীমান্তে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে অচলাবস্থা কাটাতে ডাকা হয় বৈঠক। সোমবার ও মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সব পক্ষ আলোচনায় বসলেও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর, কাস্টমস, বিএসএফ, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, ট্রাক মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নসহ বন্দর ব্যবহারকারীরা তাদের নিজ নিজ সিদ্ধান্তে অটল থাকায় বিষয়টি সুরাহা হয়নি। আজ বুধবার আবারও বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের শূন্যরেখায় প্রায় দেড় হাজার ট্রাক আমদানি ও রপ্তানি পণ্য নিয়ে প্রবেশের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে। এসব পণ্যের মধ্যে শিল্পকলকারখানার কাঁচামাল, তৈরি পোশাক, অক্সিজেন, কেমিক্যাল ও শিশুখাদ্যসহ পচনশীল পণ্য রয়েছে। দ্রুত বাণিজ্য চালু না হলে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। ছোটখাটো বিষয়ে ধর্মঘট ডেকে বাণিজ্য বন্ধ না করে বৈঠকে সমাধানের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।