, , , ,

সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২২ পালন

মোঃ মাসুদ রানা, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২২ পালিত হয়েছে।
“টেকসই আগামীর জন্য
জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগণ্য”
এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ মঙ্গলবার (০৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২২ উপলক্ষে জনাব মোছাঃ ফারহানা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস), সিরাজগঞ্জ, সমন্বয়ক রাজশাহী রেঞ্জ ও মেট্রোঃ, বিপিডব্লিউন এর সভাপতিত্বে শহীদ কনস্টেবল আলাউদ্দিন ড্রিলশেড আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
 অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সম্মানিত পুলিশ সুপার জনাব হাসিবুল আলম, বিপিএম মহোদয়।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব সেলিনা বেগম স্বপ্না, সংরক্ষিত সিরাজগঞ্জ ও পাবনা আসনের সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য।
এ সময় পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজ থেকে “একটি জেন্ডার বান্ধব কর্মপরিবেশের মাধ্যমেই সম্ভব বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়ন” সম্পর্কে বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এছাড়াও এ দিবস উপলক্ষে সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।
সবশেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার বলেন, বাংলাদেশেও আমরা প্রতিবছর দিবসটি উদযাপন করি। নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন চলে, সংবাদমাধ্যমে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়। কিন্তু উন্নত বিশ্ব ও বাংলাদেশের নারীর অবস্থার মধ্যে বেশ পার্থক্য আছে। এ দেশে নারীসমাজ আজও সব ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। ‘ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন সার্ভে ২০১১’ নামে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপের তথ্য হলো, দেশের ৮৭ শতাংশ বিবাহিত নারী আপন গৃহেই নির্যাতনের শিকার। ৬৫ শতাংশ স্বামীর মাধ্যমে শারীরিক নির্যাতন, ৩৬ শতাংশ যৌন নির্যাতন, ৮২ শতাংশ মানসিক এবং ৫৩ শতাংশ স্বামীর মাধ্যমে অর্থনৈতিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর আইন থাকা সত্ত্বেও ধর্ষণ, যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনসহ নানা রকমের সহিংসতা দমনে রাষ্ট্র ও সমাজের ব্যর্থতার পাল্লা যেন দিনে দিনে আরও ভারী হচ্ছে। পথে-ঘাটে ও কর্মক্ষেত্রে তো বটেই; ঘরের ভেতরেও নারীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তাহীনতা দূর হচ্ছে না। অথচ সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের বিস্ময়কর সাফল্যের পেছনে নারীর বিরাট ভূমিকা রয়েছে।
সামাজিক-সাংস্কৃতিক-মনস্তাত্ত্বিক বৈষম্য ও নিরাপত্তাহীনতা সত্ত্বেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টির ক্ষেত্রে নারীর অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। লিঙ্গসমতা সূচকে এ দেশের নারীদের অবস্থান এখন পার্শ্ববর্তী ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নারীদের তুলনায় উন্নত হয়েছে। কিন্তু অধিকারের সম্পূর্ণ সমতা আসেনি। চাকরির ক্ষেত্রে নারী সমান সুযোগ থেকে বঞ্চিত; নিম্ন আয়ের শ্রমজীবীদের মধ্যে নারী পুরুষের চেয়ে কম মজুরি পান। স্থানীয় সরকার পর্যায়ে নারীর ক্ষমতায়নের চেষ্টা খুব ফলপ্রসূ হচ্ছে না তাঁদের পুরুষ সহকর্মীদের পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে। জাতীয় রাজনীতিতেও নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ বাড়েনি, নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় নারীর গুরুত্বও বাড়ছে না। কিন্তু শিক্ষার সকল পর্যায়েই দেখা যাচ্ছে, নারীরা পুরুষের সমান মেধার পরিচয় দিচ্ছেন।
নারীর সম-অধিকারের প্রশ্নটি কেবল নারীসমাজে অগ্রগতির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। বস্তুত, এতে রয়েছে নারী-পুরুষের মিলিত বিশ্বে সর্বজনীন প্রগতির প্রতিশ্রুতি। আমাদের সমাজে নারী-পুরুষ সমতা অর্জনের পথে পশ্চাৎমুখী দৃষ্টিভঙ্গি এক বিরাট বাধা। শিক্ষায় নারীর আরও অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে পরিবার থেকে শুরু করে রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বক্ষেত্রে সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গিতে অবশ্যই পরিবর্তন আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
উক্ত অনুষ্ঠানে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দসহ, সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, বিপিডব্লিউএন নারী পুলিশ সদস্যবৃন্দ, পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা মন্ডলী, ছাত্রছাত্রীবৃন্দ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
Facebook Comments Box
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225
  • Untitled post 11155
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225