আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ
পায়রা সমুদ্র বন্দরের মালামাল সরবরাহকারী পরিচয়ে আমতলী উপজেলার বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দুই কোটি টাকা নিয়ে মহিবুল্লাহ নামের এক প্রতারক গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার প্রতারনার খপ্পরে পরে ২০ জন ব্যবসায়ী সর্বসান্ত হয়ে পড়েছেন। বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ী কাজী আনোয়ার, সরদার সরোয়ার হোসেন, জিএম ওসমানী হাসান, মইনুল ইসলাম ও সোহেল হোসেন এমন অভিযোগ করেন। দ্রুত প্রতারক মহিবুল্লাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন তারা।
জানাগেছে, আমতলী পৌর শহরের বাসুগী গ্রামের মোঃ আব্দুল রশিদ হাওলাদারের ছেলে মোঃ মহিবুল্লাহ পায়রা সমুদ্র বন্দরের মালামাল সরবরাহকারী হিসেবে এলাকায় পরিচয় দেয়। ওই পরিচয়ে তিনি গত দুই বছরে ধরে এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিটুমিন, পাথর, রড ও সিমেন্ট দেয়ার কথা বলে অন্তত দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। গত দুই মাস আগে মহিবুল্লাহ গোপনে বিদেশে যাওয়ার জন্য বরগুনা পাস পোর্ট অফিসে পাসপোর্ট করতে আবেদন করেন। ওই পাসপোর্টের পুলিশ ফেরিফিকেশনের জন্য আমতলী থানায় আসে। এ বিষয়টি টের পান ব্যবসায়ীরা। পরে তারা মহিবুল্লাহর কাছে টাকা ফেরত চেয়ে চাপ সৃষ্টি করে। বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে মহিবুল্লাহ ব্যবসায়ীদের সাথে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে গা-ঢাকা দিয়েছেন। গত এক মাস ধরে তিনি লাপাত্তা। প্রতারক মকিবুল্লার খপ্পরে পরে ব্যবসায়ীরা সর্বসান্ত হয়ে পরেছেন। ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন মহিবুল্লাহ পায়রা সমুদ্র বন্দরে মালামাল সরবরাহকারী পরিচয় দিয়ে এলাকার অন্তত ২০ জনের কাছ থেকে বিটুমিন, সিমেন্ট, রড়, পাথর দেয়ার কথা বলে অন্তত দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার খপ্পরে পড়ে আমরা সর্বসান্ত হয়ে গেছি। দ্রুত প্রতারক মহিবুল্লাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ী কাজী আনোয়ার বলেন, প্রতারক মকিবুল্লাহ আমার কাছ থেকে বিটুমিন দেয়ার কথা বলে পাঁচ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গত দুই বছর ধরে মাল না দিয়ে ঘুরিয়ে আসছে। এখন সে পলাতক রয়েছে।
আড়পাঙ্গাশিয়া ইউপি সদস্য সরদার মোঃ সরোয়ার হোসেন বলেন, সিমেন্ট দেয়ার কথা বলে এক বছর আগে আমার কাছ থেকে ছয় লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মহিবুল্লাহ। তাকে টাকা দিয়ে আমি সর্বসান্ত।
আমতলী উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জিএম ওসমানী হাসান বলেন, বিটুমিন দেয়ার কথা বলে ১৪ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা নিয়েছে প্রতারক। এখন প্রতারক মহিবুল্লাহ লাপাত্তা।
ঠিকাদার মোঃ মইনুল ইসলাম বলেন, সিমেন্ট ও বিটুমিন দেয়ার কথা বলে গত তিন মাস আগে আমার কাছ থেকে ৩৪ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা নিয়েছে। এখন তাকে খুজে পাচ্ছি না। তার সকল মোবাইল নম্বর বন্ধ রয়েছে।
ব্যবসায়ী মোঃ সোহেল হোসেন বলেন, সিমেন্ট দেয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ছয় মাস আগে ৩০ লক্ষ টাকা নিয়েছে। মানুষের কাছ থেকে ধার এনে টাকা দিয়েছি। এখন কি করবো দিশে পাচ্ছি না। আমার সব হারিয়েছি।
প্রতারক মহিবুল্লাহর মুঠোফোনে (০১৭২৬৩১৭৯৭২, ০১৭২৭৮৮৬৯৩৩) যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
আমতলী থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান বলেন, অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।