, ,

বিদ্যালয়ের পুরনো ঐতিহ্য ফিরবে, প্রধান শিক্ষকের প্রত্যাবর্তনে আশাবাদী ট্র্যাবের মুখপাত্র আবিদ

চট্টগ্রামের হালিশহরে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী গরীবে নেওয়াজ উচ্চ বিদ্যালয় অবশেষে ফিরে পেল তার যোগ্য প্রধান শিক্ষককে। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে মামলা ও বিভিন্ন জটিলতার পর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম অবশেষে নিজের চেয়ারে ফিরতে সক্ষম হয়েছেন।

 

গত ৫ বছর আগে প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলামকে বিভিন্ন অভিযোগ ও দুর্নীতির দায়ে জোরপূর্বক স্কুল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর তিনি প্রমাণ করতে সক্ষম হন যে, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো ছিল ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আদালতের রায় তার পক্ষেই যায় এবং চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডও তার নির্দোষ থাকার প্রমান পায়। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসে তিনি পুনরায় তার দায়িত্ব গ্রহণের অনুমতি পান।

টেলিভিশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ট্র্যাব)-এর মুখপাত্র ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ডিএমসিআরএস এর মুখপাত্র মুহাম্মদ আবু আবিদ এই ঘটনাকে বিদ্যালয়ের জন্য একটি ঐতিহাসিক ও স্মরণীয় মুহূর্ত বলে উল্লেখ করেছেন। উল্লেখ্য যে মুহাম্মদ আবু আবিদ এই বিদ্যালয় থেকেই এসএসসি পাশ করেছেন।

নিজের প্রিয় বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন মুহাম্মদ আবু আবিদ। তবে তার আবেগ আরও গভীর হয়ে ওঠে, যখন তিনি জানতে পারেন যে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম সকল অভিযোগের বিপরীতে নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ প্রমাণ করে অবশেষে তার ন্যায্য আসনে ফিরে এসেছেন। একসময় যে শিক্ষক ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান, আজ পাঁচ বছর পর তিনি ফিরে এসেছেন তার যথার্থ সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে—এই সংবাদ মুহাম্মদ আবু আবিদের হৃদয়ে এক অনন্য অনুভূতির সৃষ্টি করে।

এসময় মুহাম্মদ আবু আবিদ বলেন ” যোগ্য শিক্ষক তার নিজ আসনে ফিরে পাওয়াটা শুধু একজন শিক্ষকের জয় নয়, এটি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ন্যায়ের জয়। গরীবে নেওয়াজ উচ্চ বিদ্যালয় আবারও সঠিক নেতৃত্বে পরিচালিত হবে বলে আমি আশাবাদী। আমি এই বিদ্যালয়ে পরপর দুইবার নির্বাচিত স্টুডেন্টস ক্যাবিনেট সভাপতি ছিলাম। তাই খুব কাছ থেকে স্যারের নেতৃত্ব দেখার সুযোগ হয়েছে। আমি নিশ্চিত খুব তাড়াতাড়ি গরীবে নেওয়াজ উচ্চ বিদ্যালয় পুনরায় একটি সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিনত হবে।

এ বিষয়ে মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ৫ বছর কতটা যন্ত্রণা সহ্য করেছি তা বলার ভাষা আমার নেই। আমার সন্তানদের কাছ থেকে বিনা অপরাধে আমাকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল। এটাই আমার সবচেয়ে বেশি কষ্ট হত। আজ আমি আনন্দিত, আমার সকল সন্তানদের আবারও কাছে পেয়েছি। তবে মুহাম্মদ আবু আবিদ বিদ্যালয় পড়াকালীন সময়ই বিদ্যালয়ের নাম দেশের কাছে যেভাবে উজ্জ্বল করেছে, দিনকে দিন যত যাচ্ছে তার সাফল্যে আমরা গর্বিত হই। তিনি আজ আমাদের বিদ্যালয় এসেছেন, তাতে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উৎফুল্ল ও উল্লসিত।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের বেসরকারি কারা পরিদর্শক আঁখি সুলতানা, দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশন এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আবু আদিল, বিএমইউজে এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগ আরেফিন, সাংবাদিক নেতা শহীদুল ইসলাম, সাংবাদিক সাইফ উদ্দিন রমিজ, সাংবাদিক সাফায়েত মোর্শেদসহ চট্টগ্রামের বিশিষ্ট সাংবাদিক সংগঠক ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ।

বিদ্যালয়ের অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক প্রধান শিক্ষকের ফিরে আসার খবরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, বিদ্যালয়ের মানোন্নয়ন ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে মো. রফিকুল ইসলামের অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীরাও প্রধান শিক্ষককে ফিরে পেয়ে আনন্দিত। তারা বিশ্বাস করে, নতুনভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হবে এবং বিদ্যালয় আবারও তার পুরোনো গৌরব ফিরে পাবে।

Facebook Comments Box
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225
  • Untitled post 11155
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225