দৌলতপুরে সড়ক সংস্কারে অনিয়ম: গ্রামবাসীর প্রতিবাদ, চাঁদাবাজির মামলা!

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি:

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার হোসেনাবাদ এলাকায় স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে বাস্তবায়নাধীন একটি সড়কের কাজে ঠিকাদারের অনিয়ম দূনর্তির প্রতিবাদ করায় নিরীহ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।

এ ঘটনার পর বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী নিয়ম অনুযায়ী সড়ক নির্মান ও গ্রামবাসীর নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে শুক্রবার দুপুরে মানববন্ধন করেছে।

সরেজমিনে প্রাপ্ত তথ্যে জানাযায়, মথুরাপুর জিসি থেকে জুনিয়াদহ জিসির ১৭৬২ মিটার পাকা সড়ক সংস্কারের কাজ পান টিটু এন্টারপ্রাইজ নামক চুয়াডাঙ্গার এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। যার প্রক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৬৯,২৭,২৭৬ টাকা। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ২৯/১২/২০১৯ ইং তারিখে কাজ শুরু করে শেষকরার কথাছিল গত ১২/০৩/২০২০ তারিখে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে ভেড়ামারা এলাকার নাসির নামে এক ঠিকাদারের কাছে কাজ বিক্রি করে দেন প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি ঠিকাদার নাসির ব্যাপক অনিয়মের মধ্য দিয়ে সড়কের কাজ শুরু করেন। এবং গত ১৫ই জুন ঐ সড়কে কার্পেটিং করার সময় নিম্ন মানের উপকরন ব্যবহার করায় এলাকাবাসি প্রতিবাদ জানায় এবং কাজ বন্ধ করে দেন। এই ঘটনায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ১৩ জন নিরিহ গ্রামবাসির বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় চাঁদাবাজি ও মারপিটের অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন।

 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, সড়ক নির্মান কাজের প্রাইম কোর্ট এর ৪৮ ঘন্টা পর কার্পেটিং করার বিধান থাকলেও আগের দিন শুক্রবার সন্ধায় ঐ সড়কে প্রাইম কোর্ট করা হয়। এরপর বৃষ্টিতে প্রাইম কোর্ট ধুয়ে গেলেও পরদিন নতুন করে প্রাইম কোর্ট না করেই নিম্ন মানের পাথর ও বিটুমিন ব্যবহার করে ঐ সড়কের কার্পেটিং করা হয়।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কপোর্রেশন বিপিসি’র ৬০-৭০ গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করার কথা কিন্তু আগেরদিন রাতে কালো ড্রামের ইরানি বিটুমিন গলিয়ে ঐ সড়কে ব্যবহার করা হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় প্রকৌশলী অফিসের দায়ীত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অদক্ষতা অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে তারা এড়িয়ে গেছেন। এলাকাবাসী জানায়, ১৬ জুন সন্ধ্যায় ঠিকাদারের নিম্নমানের মালামাল সরিয়ে নিয়ে যায়। এবং পরদিন ১৭ জুন গ্রামবাসীদের নামে মামলা দায়ের করেন। এলাকাবাসী এ মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে শুক্রবার দুপুরে হোসেনাবাদ সড়কে মানববন্ধন করেছে।

এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে সাব কন্ট্রাকটর নাসির উদ্দিন এ ব্যাপারে কিছু বলতে রাজি হয়নি।

এবিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার উদ্দিন জোয়াদ্দার জানায়, আমার জানামতে কাজে কোন অনিয়ম নেই। তবে যদি কাজে কোন অনিয়ম পাওয়া যায় তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এলাকাবাসীর নামে চাঁদাবাজির মামলা হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অবগত নন বলে জানান।

নিরীহ গ্রামবাসীর নামে মামলা হওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লিখিতভাবে গ্রামবাসী তাকে জানাননি বলে জানান তিনি।

 

 

 

 

 

Facebook Comments Box
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225
  • Untitled post 11155
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225