কাগজের ফুল বিক্রি করে সংসার চলে সোবাহানের

মেহেদী হাসান্ উজ্জল,ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

ফুল ভালোবাসার প্রতিক।তাই প্রকৃতি ও ফুল প্রতিটা মানুষকে কাছে টানে,সে কারনে প্রতিটি মানুষ প্রকৃতি ও ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভালোবাসে। ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুস্কর। প্রকৃতি ও সৌন্দয্য পিপাসু প্রতিটি মানুষ তাদের বাড়ির আঙিনা বা ছাদে ফুল চাষ করে থাকেন। কেউ বা আবার ফুলের গাছ টবে লাগিয়ে বাড়ির ছাদ বা বারান্দায় রাখেন । আর শিশুদের খেলনা কিংবা ঘরের সৌন্দয্য বৃদ্ধিতে ঘরে রাখেন কৃত্রিম ফুল। তাছাড়া বিয়ে,জন্মদিনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কাগজের ফুলের কদরতো রয়েছেই।

কাগজের এই ফুল শুধু সৌন্দয্যের প্রতীক নয়, এমন কিছু পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করতেও বিশেষ ভুমিকা পালন করে। এই কাগজ ও প্লাাস্টিকের মনকাড়া কৃত্রিম ফুল তৈরি ও বিক্রি করে প্রায় ৫ বছর ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন আত্রাই উপজেলার বড়গাছা ইউনিয়নের শলিয়া পাড়া গ্রামের সোবাহান প্রামানিক (৫৮)।

তিনি প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের হাট-বাজার,পাড়া-মহল্লার অলিতে গলিতে পথে পথে ঘুরে রঙ্গিন কাগজের ফুল ও প্লাস্টিকের ফুল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সারাদিন কাঠফাটা রোদ কিংবা মুষলধারে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ফুল বিক্রি করতেই হবে তাকে। তা না হলে তার সংসার চলবে কি করে ? নিজ হাতে তৈরী কাগজের ফুল বিক্রি করাই তো তার অন্ন জোগানোর একমাত্র উৎস। ফুল নেবে ফুল,.লাল-নীল রঙ্গিন কাগজের ফুল। এমন করে গ্রামের পথে পথে কাগজের ফুল বিক্রেতার হাঁক শুনলেই গ্রামের ছোট বড় সকলেই ছুটে আসেন ফুল নিতে।

গতকাল রোববার সকালে ফুলবাড়ী উপজেলার কাঁটাবাড়ী নয়াপাড়া গ্রামের রাস্তার পাশে পড়ন্ত বিকেলে দেখা মেলে সোবাহান প্রামানিক নামের এই কাগজের ফুল বিক্রেতার সাথে। ফুল বিক্রির পাশাপাশি দীর্ঘ সময় আলাপচারিতায় তার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি আগে কৃষি কাজ করতাম। বয়স হয়েছে তাই তেমন শক্তি পাইনা তাই জীবিকা অর্জন আর অল্প পুঁজিতে এ ব্যবসা করা যায় বলেই ৫বছর হলো এ ব্যবসা শুরু করেছি। তিনি কান্না ভারাকান্ত কন্ঠে বলেন,একটি মাত্র ছেলে সে বিয়ে করে আলাদা থাকে আমাদের খোজ খবর রাখেনা,আরো দুটি মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। স্ত্রী ও ছোট মেয়েকে সঙ্গে নিয়েই অভাবের সংসারে এভাবেই জীবন যুদ্ধো চালিয়ে যাচ্ছি।

প্রতিদিন সকাল হলেই ফুল বিক্রি করতে চলে যাই পার্শ্ববর্তী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। প্রতিটি ফুল ৫-১০ টাকায় বিক্রি করে সারাদিনে কম পক্ষে ৩শ থেকে ৪শ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকি। কিন্তু বর্তমানে করোনার কারনে স্কুল বন্ধ,এখন আর তেমন জনসমাগম নেই, তাই ফুল তেমন বিক্রি হচ্ছেনা,কনো রকমে চলে। তিনি আরো বলেন, ব্যবসা যদিও লাভজনক তার পরও জীবনের যথেষ্ট ঝুঁকিও রয়েছে। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাসের ছাদে বা  ট্রাকে  কখোনো ট্রেনে করে গন্তব্যে যাই। এভাবেই চলে আমাদের জীবন জীবিকা।

Facebook Comments Box
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225
  • Untitled post 11155
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225