দৌলতপুরে সড়ক সংস্কারে অনিয়মের তদন্তকালে ঠিকাদারের ক্যাডার বাহিনীর হামলা!

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মথুরাপুর জিসি থেকে জুনিয়াদহ জিসির ১৭৬২ মিটার পাকা সড়ক সংস্কারে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে গত ২০ই জুন বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়। সেসময় রাস্তাটি প্রচন্ড বৃষ্টিতে কাদা ও পানির মধ্যে তড়ি ঘড়ি করে নিম্নমানে ইট ও বিটুমিন দিয়ে কাজ শেষ করতে থাকলে এলাকাবাসি বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

তাতেই ক্ষুদ্ধ হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ্যসহ আরো অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামী করে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবীর মিথ্যা মামলাও করলেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান টিটু এন্টারপ্রাইজের কর্নধার মোঃ ফিরোজ আহম্মেদ।

জানা যায়, উপজেলার মথুরাপুর জিসি থেকে জুনিয়াদহ জিসির ১৭৬২ মিটার পাকা সড়ক মেরামত ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে শুরু হয়। সংস্কারে কাজটি পান টিটু এন্টার প্রাইজ নামক চুয়াডাঙ্গার এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। উক্ত সড়ক সংস্কারের ব্যয় ধরা হয় ৬৯,২৭,২৭৬ টাকা।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ২৯/১২/২০১৯ ইং তারিখে কাজ শুরু করে শেষকরার কথাছিল গত ১২/০৩/২০২০ তারিখে। কিন্তু সেই সময় পার হলেও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে নাসির নামে এক ঠিকাদারের কাছে কাজ বিক্রি করে দেন প্রতিষ্ঠানটি। কিছুদিন পরে কাজ শুরু হলেও অভিযোগ উঠে অনিয়মের।

এরই মধ্যে বৃষ্টিতে কাদা ও পানির মধ্যে তড়ি ঘড়ি করে নি¤œমানে ইট ও বিটুমিন দিয়ে কাজ শেষ করা হয়। যার ফলে হাত দিলেই সড়কের কারপেটিং উঠে আসে হাতের সাথে। সড়কের অবস্থা দেখে এলাকাবাসির মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং রাস্তা ভালোভাবে সংস্কারের জন্য বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা। সেসময় এলাকাবাসির ক্ষোভ ও সড়কের অবস্থা দেখতে গিয়ে তোপের মুখেও পড়েন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

পরে এ বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়া ও অনলাইলে ছড়িয়ে পড়লে সড়ক সংস্কারে কাজ বন্ধ করে দেয় স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশলী বিভাগ।

আজ রবিবার ১২ই জুলাই ২০২০ তারিখে এলাবাসীর অভিযোগ ও সড়ক সংস্কারে অনিয়ম হওয়ার বিষয়টি তদন্ত করতে এসে তদন্ত কাজে বাধার স্বীকার হয়েছে তত্বাবধায়ক পৌকশলী বিপুল বনিক (এলজিইডি সদস দপ্তর)। তদন্ত চলাকালীন সময় তিনি বলেন, এই রাস্তাটির অনিয়মের অভিযোগে আমি তদন্তে এসেছি। রাস্তাটি ঠিকভাবে হয়েছে কিনা সেটা আমরা দেখছি। দেখার পর যদি রাস্তাটির সংস্কারে কোন অনিয়ম হয়। তাহলে তদন্ত করে যাতে করে সঠিক বিচার হয় সেই ব্যবস্থা আমরা সদর দপ্তর করবো বলে তিনি জানিয়েছেন।

এসময় এলাকাবাসীর পক্ষে অভিযোগকারী মোতাসিম বিল্লাকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ক্যাডারবাহিনী ও কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা শারীরিক ভাবে লাঞ্চিতসহ মারধর করেছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরো জানান, আমি এলাকাবাসীর পক্ষে রাস্তাটির সংস্কার কাজে অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলাম সে কারনে তদন্ত কার্যক্রম দেখতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দৌলতপুর উপজেলার ঠিকাদার সাদিকুজ্জামান খান সুমন সহ তার ২০/২৫জন ক্যাডারবাহিনীকে দিয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান টিটু এন্টারপ্রাজ এর পক্ষ নিয়ে আমাকে মারধর ও শাররিকভাবে লাঞ্চিত করে।

এব্যাপারে সদিকুজ্জামান খান সুমনের কাছে জানতে চাওয়ার জন্য একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ’ই করনেনি।

 

Facebook Comments Box
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225
  • Untitled post 11155
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225