ঈদ এলেই প্রতি বছর দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর দোকানগুলো সাজানো হয় বর্ণিল সাজে,জমে উঠে বেচা কেনা। প্রতিবছর এই সময় ঈদের আমেজে সবার মনে আনন্দের সিমা থাকেনা। ঈদের চাঁদ উঠা মাত্রই বাজারে ছুটতে থাকে যে যার পছন্দ মতো কেনা কাটা করতে। আর মাত্র কয়েকে দিন বাকি, ঈদ ঘনিয়ে আসলেও করোনার প্রাদুর্ভাবের কারনে এখনও কেনাকাটা পুরোপুরি জমে উঠেনি ঈদের বাজার।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন,অন্যান্য বছর যেমন ঈদের ১৫দিন আগে থেকেই বাজারে কেনাকাটার ধুম পড়ে যায়,এবার তার ব্যতিক্রম ঘটেছে। ঈদের আর মাত্র ৬দিন বাকি এখনো ফুলবাড়ীর মার্কেটগুলোতে ঈদের কেনাকাটায় তেমন ভিড় দেখা যায়নি। তবে শিশুদের পোশাকের দোকানে কেনাকাটা কিছুটা দেখা গেছে। ঈদ বাজার হিসেবে বাজারের দোকান গুলোতে যতোটা বেচাকেনা হওয়া দরকার,ততটা হচ্ছেনা। অতিরিক্তি প্রয়োজন ছাড়া এবার কেনাকাটায় তেমন উৎসাহ নেই ক্রেতাদের মনে। কোরোনা প্ররিস্থিতির কারনে এমন অবস্থা,ব্যাবসাও তেমন ভালো যাচ্ছেনা। অথচ অন্যান্য বছর এ সময়ে ক্রেতাদের ভিড়ে সরগরম থাকতো পৌর শহরের বিপণী-বিতানগুলো। গত বছরের তুলনায় এবার ক্রেতা একেবারেই কম,তবে কিছু কিছু দোকানে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যাচ্ছে।
ফুলবাড়ী বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির নেতা সহকারী অধ্যাপক শেখ সাবীর আলী বলেন,এবছর কৃষকের উৎপাদিত ফসলের মুল্য ভালো পেলেও বর্তমানে ইরি বোরো চাষবাদের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে কৃষকরা,সেই সাথে কোরবানীর জন্য গরু-ছাগল কেনা বেচা নিয়েও খানিকটা ব্যস্ত এখন মানুষ। অপরদিকে করোনার কারনে অনেকেই কর্মহিন হয়ে পড়েছে,ফলে দিন মজুরদের হাতে এবার টাকা-পয়সা তেমন নেই। একিরকম অবস্থা মধ্যবিত্তদেরও।
আবার করোনায় বে-সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় বেতন-বোনাস না থাকায় তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। সে কারনে তারাও এবার ঈদের কেনাকাটায় মনোযোগ দিতে পারেনি, আর তাই দোকানগুলোতে ক্রেতাদের তেমন ভিড় নেই বলে ব্যবসায়ীরা মনে করছেন।
ফুুলবাড়ী বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী ইয়াকুব আলী ও সোহেল রানা জানান,বর্তমানে বেচা কেনা খুব খারাপ চলছে। যেখানে ঈদে এ সময় ক্রেতাদের ভিড়ে আমরা ব্যবসায়ীরা দম ফেলানোর ফুরসত পাইনা, সেখানে সারাদিনে অল্প সংখ্যক ক্রেতারা আসছেন। এখনও পুরোদমে বেচাকেনা শুরু না হলেও ঈদের দু একদিন আগে হয়তো ক্রেতাদের ভিড় জমতে পারে বলে তারা মনে করছেন তারা।
ফুলবাড়ী বাজারের ২টি অভিজাত টেইলার্স ভিআইপি ও বেনিসন তাদের অর্ডার এখনও অব্যাহত রেখেছে। অথচ গত বছর এ সময় অর্ডার নেয়া বন্ধ ছিল। শাড়ী কাপড়ের দোকানের কিছু কিছু দোকানে কিছুটা ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এবার ফুলবাড়ী বাজারে ক্রেতাদের মধ্যে তরুন-তরুনীদের ভিড়ই বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বিশেষ করে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় তারা দল বেধে দোকানগুলোতে কেনাকাটা করতে আসছে ।