বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে সব দেশই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি থাকলেও তা কেনার বিষয়ে আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
আজ বুধবার (১২ আগস্ট) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ কথা জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনলাইনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জানান, আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভা করার কথা রয়েছে। সেই সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে চীনকে বাংলাদেশে তাদের ভ্যাকসিন ট্রায়াল করতে দেওয়া হবে কিনা। এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হলে চীন বাংলাদেশে কতো মানুষের ওপর ট্রায়াল করবে, এক্ষেত্রে চীন আমাদের কতো টাকা দেবে, ট্রায়াল হলে চীন কি শর্তে ভ্যাকসিন দেবে-সেসব নিয়ে সিদ্ধান্তের পর চীনকে ট্রায়াল করতে দেওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় যে ভ্যাকসিন আবিষ্কার করছে তা বিভিন্ন দেশে সরবরাহ করার জন্য তারা চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে এবং অ্যাডভান্স নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের মর্ডানাসহ অন্য ভ্যাকসিন উদ্ভাবক কোম্পানিগুলোর সঙ্গেও বিভিন্ন দেশ চুক্তি করছে এবং অ্যাডভান্স দিচ্ছে। যারা আগে থেকে অ্যাডভান্স করে রাখছে, তাদের আগে টিকা সরবরাহ করবে কোম্পানিগুলো। আমরাও এসব কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তি করা কিংবা অ্যাডভান্স দেওয়ার বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা টিকা উদ্ভাবক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সংস্থাটির লক্ষ্য হলো শুরুতে বিভিন্ন দেশের ৩ শতাংশ মানুষকে টিকা সরবরাহ করা এবং আগামী মার্চে তারা ২০ শতাংশ মানুষের জন্য টিকা সরবরাহের উদ্দেশ্যে কাজ করছে।’
বৈঠকে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেছেন, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন যাতে দ্রুত সংগ্রহ করা যায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এবিষয়ে যেসব দেশ ভ্যাকসিন বাজারজাত চূড়ান্ত করছে তাদের মধ্যে রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশ ও সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ভ্যাকসিন আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ রয়েছে। ’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার পরই বিষয়টি আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে বলতে পারবো। তার আগে কিছু বলা ঠিক হবে না। কোনো একক সোর্স থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করার পরিবর্তে আমরা একাধিক সোর্স থেকে সংগ্রহের চেষ্টা করবো। ইতোমধ্যে ভারত অক্সফোর্ডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। আমারও চেষ্টা করবো। যদি অক্সফোর্ডেও সঙ্গে সম্ভব না হয় তা হলে ভারতের সঙ্গেও যোগাযোগ করবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে বিষয়টি মনিটরিং করছেন। আর এ জন্য আলাদা করে অর্থ বরাদ্দ রয়েছে। প্রয়োজন হলে আরও বরাদ্দ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।