দিনাজপুরের পার্বতীপুরে জোরপূর্বক সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখলের চেষ্টা, আদালতে মামলা। উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের আনন্দ বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। আনন্দবাজার এলাকার মা মাসী বালিকা বিদ্যালয়ের নামে,ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে জোরপূর্বক সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ১০ নং হরিরামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান ওরফে মাসুদ শাহসহ ৭ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা করেছেন রমনী মহন্ত নামে এক সংখ্যালঘু ভূমি মালিক। আসামী পক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায়, মামলার পর থেকে আসামীদের হুমকির কারণে আতঙ্কে দিন কাটাচেছ সংখ্যালঘু ওই পরিবারের সদস্যরা ।
মামলার এজাহারভূক্ত আসামীরা হলেন, পার্বতীপুর উপজেলার ১০নং হরিরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান ওরফে মাসুদ শাহ(৫০),খাগড়াবন্দ এলাকার মৃত বাকা গাছুয়ার ছেলে মোঃ মিজানুর রহমান(৪০),চঁাচেয়া এলাকার মৃত ইউসুফ গাছুয়ার ছেলে মোঃ খলিলুর রহমান(৪৫),মৃত কই চৌধুরীর ছেলে ইয়াছিন আলী (৫২),সাইদুল হকের ছেলে মোঃ রাসেদ আলী(৩৫), খাগড়াবন্দ এলাকার মৃত মতিয়ার রহমানের ছেলে মোঃ সাহাজুল ইসলাম,সাজু(৩৫) এবং চঁাচেয়া এলাকার মোঃ ইসাহাক আলীর ছেলে মোঃ শামীম(৩০)।
বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-৫ পার্বতীপুর এ রমনী মহন্তের দায়েরকৃত মামলাসূত্রে জানা যায়, বাদীর পিতা ধনিরাম মহন্তের চার ছেলে ৫০৬নং ও ৪১৭ নং দাগের ৫৯শতক সম্পত্তি প্রত্যেকে ১৫ শতক করে প্রাপ্ত হইয়া ভোগ দখল করিয়া আসিতেছিলো, বিবাদী পক্ষ অত্যন্ত সুকৌশলে বাদীর ভাই হরিশ চন্দ্র মহন্তকে মা-মাসী বালিকা বিদ্যালয়ে চাকুরী দেয়ার কথা বলে ১৫ শতক জমি দান পত্র রেজিস্ট্রি করেন। কিন্তু জমি নেয়ার পরেও বাদীর ভাইয়ের চাকুরী স্কুল কতর্ৃপক্ষ না দেয়ায় সেই শোকে কিছুদিন পুর্বে মারা যান তিনি। এরপরেও থেমে থাকেনি বিবাদী পক্ষ তারা হরিশ চন্দ্র মহন্তের জমির পাশের্ব থাকা তার ভাইয়ের (বাদীর ) অবশিষ্ট ১৫ শতক জমি জোরপূর্বক দখল ও রেজিস্ট্রির চেষ্টায় বাদিকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিতে থাকে। অবশেষে জমি দিতে অস্বীকার করায় বাদী ও বাদীর স্ত্রীকে বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানী করে মারপিট করলে। গত ১লা সেপ্টেম্বর রমনী মহন্ত বাদী হয়ে দিনাজপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা করেন। নির্যাতনের শিকার ওই সংখ্যালঘুর পরিবার পূর্ব পুরুষের রের্কড সূত্রে জমি প্রাপ্ত হলেও জোরপূর্বক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের লাঠিয়াল বাহিনীর অত্যাচারে ভীত হয়ে আদালতের শরনাপন্ন হয়েছেন বলে জানান মামলার বাদি রমনী মহন্ত ও স্ত্রী দিপ্তী মহন্ত। রমনী মহন্ত বলেন মামলার পর থেকে বিবাদীগন বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে তাই তারা এখন আতঙ্কে ভুগছেন। তাই তারা বিচারের দাবীতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
সরেজমিনে ঘটনার বিষয়ে খোজ খবর নিতে গেলে মামলার বিবাদী মিজানুর রহমান এর সাথে কথা বললে তিনি সাংবাদিকদের উপর চড়াউ হয়ে বলেন কারো জমি তারা দখল করতে যায়নি,স্কুলের জমি মাপযোগ করতে গেলে রমনি মহন্ত বাধা প্রদান করে ওল্টো মামলা দিয়েছেন।
এবিষয়ে বিদ্যালয়লের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ১০নং হরিরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি জানান,মোবাইল ফোনে এত কথা বলা সম্ভব নয় যে মামলা হয়েছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা।
পার্বতীপুর মডেল থানার ওসি মোখলেছুর রহমান জানান,ঘটনার বিষয়ে কোন পক্ষই তার সাথে যোগাযোগ করেননি এবং আদালতের মামলার কোন কাগজপত্র এখন পর্যন্ত তিনি পাননি।
পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান,এবিষয়ে কোন অভিযোগ আমার কাছে আসেনি,আদালতে মামলা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে আমি কিছুর জানিনা। এদিকে সংখ্যালঘু পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তারা ঘটনা সুষ্ট তদন্ত করে বিচারের দাবীসহ প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।