আবারো কর্মচঞ্চলতায় ফিরেছে দেশের একমাত্র ভূ-গর্ভ থেকে উৎপাদনশীল দিনাজপুরের মধ্যপাড়া পাথর খনি।
খনিতে কর্মরত শ্রমিক, পাথর ব্যবস্যায়ী আর পরিবহন শ্রমিকদদের পদচারনায় মুখোরিত হয়ে উঠেছে খনি এলাকা।
করোনার কারনে চলতি বছরের ২৬ মার্চ থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকার পর গত বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) খনি থেকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে পুরোদমে তিন শিফটে পাথর উত্তোলন শুরু করেছে খনিটির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জামার্নীয়া-টেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি)। এই কারনে শ্রমিকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে পাথর খনি চত্ত্বর।
বৃহস্পতিবার খনি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, খনির প্রধান গেটের সামনে সারী সারী পাথর বাহী ট্রাক। খনির প্রধান ফটকের সামনে পাথর ব্যবস্যায়ী, পাথর লোড আনলোড শ্রমিকসহ নানা প্রকার ছোট ছোট চা-বিস্কুটের দোকান পসরা বসিয়েছে।
খনি সুত্রে জানা গেছে, খনিটির ঠিকারী প্রতিষ্ঠান জিটিসি খনি থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করে, খনিটির উৎপাদন ইতিহাসে নয়া রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। ফলে পাথর খনিটি লোকসানী প্রতিষ্ঠান থেকে এখন লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
জানা গেছে, মধ্যপাড়া পাথর খনির রক্ষনাবেক্ষন, ব্যবস্থাপনা এবং উৎপাদন এর দায়িত্বে নিয়োজিত বর্তমান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জিটিসি’র সাথে চুক্তির পর মধ্যপাড়া পাথর খনি থেকে পাথর উত্তোলনের রেকর্ড গড়ে, এই কারনে গত ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে মধ্যপাড়া পাথর খনিটি প্রথমবারের মত লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
সুত্রটি জানায় দেশের উন্নয়নে মধ্যপাড়া পাথর খনির পাথর ব্যবহারের কথা মাথায় রেখে খনির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভূতত্ত্ববিদ এবিএম কামরুজ্জামানের দিক নির্দেশনায় পাথর উত্তোলনকে সবোচ্র্চ গুরুত্ব দিয়ে গত আগষ্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে জিটিসি প্রথম শিফট এবং পরে দ্বিতীয় শিফটে পাথর উৎপদান শুরু করে।
মাসিক এক লক্ষ ২০ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে খনিটির ঠিকারী প্রতিষ্ঠান জিটিসি বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) থেকে তিন শিফটে পুরাদমে পাথর উত্তোলন ও খনির ভূ-গর্ভের উন্নয়ন কাজ শুরু করেছে।
জিটিসির পরিচালক জাবেদ সিদ্দিক বলেন, চুক্তি পুরন ও দেশের সার্থে মধ্যপাড়া খনিতে সর্বচ্চ পাথর উত্তোলনে জিটিসি অঙ্গিকারবদ্ধ। তিনি বলেন জিটিসি শুরু থেকে চুক্তি অনুয়ায়ী সর্বচ্চ পাথর উত্তোলন করে, খনিটির পাথর উৎপাদনের ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।ু আগামীতেও একই ভাবে জিটিসি কাজ করতে প্রস্তুত বলে তিনি জানান।
মধ্যপাড়া পাথর খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভূতত্ত্ববিদ এবিএম কামরুজ্জামান বলেন, বর্তমান সরকারের রুপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ কে মাসনে রেখে, উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষের টেকসই উন্নায়নের জন্য সরকারের মেঘা প্রকল্পে পাথর সরবরাহের লক্ষে খনিটিতে পাথর উত্তোলন বৃদ্ধির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এই জন্য খনিটিতে দ্বিতীয় কূপ খননের জন্য ইতোমধ্যে সরকারের নিকট প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। সরকারী অনুমতি আসলেই দ্বিতীয় কুপের কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান।
এই ভূতত্ত্ববিদ আরো জানায় দ্বিতীয় কুপটি চালু করা হলে প্রতিদিন এই খনি থেকে সাড়ে ১৬ হাজার মেট্রিকটন পাথর উত্তোলন করা সম্ভব হবে। এতেকরে দেশের মোট পাথরের চাহিদার অর্ধেক পাথর এই খনি থেকে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।