মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তারাইল এলাকায় বেশ কিছু দিন আগে অসহায় দরিদ্র কৃষক পিতা বারেক মোল্লার মেয়ে সালমা আক্তারের বিয়ে ঠিক হয় উপজেলার পার্শ্ববতী ঝড়িয়ারবাগ এলাকার প্রবাসী জুলহাসের সাথে। আড়াই লক্ষ টাকা ধার্য করে বিয়ের রেজিট্রার হয়। শুধু বাকি থাকে ধর্মীয় মতে আনুষ্ঠানিকতা। সব কিছু ঠিক থাকলেও বাধা হয়ে দাড়ায় অজ্ঞাত একটা মোবাইল ফোনের ভুল তথ্য। ওই ছেলেকে ভুলভাল বোঝিয়ে বিয়ে ভেঙ্গে দেয় একটা চক্র। অসহায় বাবা মেয়ে নিয়ে পড়েন বিপাকে। পরে স্থানীয় এক জনের পরার্মশে থানার সরাপন্ন হন। শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফিরোজ কবির ঘটনা শুনার পরে ছেলে পক্ষের সাথে যোগাযোগ করে। ছেলে পক্ষ কোন মতেই ওই মেয়েকে বিয়ে করতে নারাজ। পরে ওসি নিজে ওই মেয়ের দায়িত্ব নিলে ছেলে পক্ষ এক পর্যায়ে রাজি হয়ে যায়। উভয় পক্ষের অভিবাকদের সাথে কথা বলে আজ শনিবার দুপুরে বিয়ের দিন ধার্য় করে। ওসি নিজে উপস্থিত থেকে ধমর্ীয় মতে সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ নিজেই উকিল বাবা হয়ে ওই ছেলের সাথে মেয়ের বিবাহ দেন। অসহায় কৃষকের পাশে মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য ওসি ফিরোজ কবির এলাকায় প্রশংসায় ভাসছেন।
মেয়ের বাবা বারেক মোল্লা কাঁদতে কাঁদতে জানান, আমি গরিব মানুষ এখন বয়স হয়েছে। যে কোন সময় মারা যেতে পারি। আমার অসহায় মেয়েটার বিয়ে ভেঙ্গে যাওযায় আমি খুবই কষ্ট পেয়েছিলাম। থানার ওসি স্যারে মাধ্যমে ছেলে পক্ষকে বুঝিয়ে মেয়ে বিয়ে দিতে পেরেছি। ওসি স্যার নিজেই মেয়ে উকিল বাবা হয়েছেন। এবং সকল দায়িত্ব নিয়েছেন। আমি আল্লাহর কাছে তার জন্য দোয়া করি, সে অসহায় মেয়ের বাবার দুঃখ বুঝেছেন।
বর জুলহাস জানান, কিছু লোক আমাকে ভুল বুঝিয়ে বিয়ে করতে নিষেধ করেছিল। ওসি স্যার আমাকে বুঝিয়ে আমার শ্বশুরের দায়িত্ব নিয়েছে। আমি এখন এ বিবাহে খুশি।
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. ফিরোজ কবির বলেন, থানা এলাকার আইন শৃঙ্খলার রক্ষা করা আমার দায়িত্ব। তবে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে আমি অসহায় মেয়েটির পাশে দাড়িয়েছি। আমার ক্ষুদ্র চেষ্টার কারনে আজ মেয়েটির বিয়ে হয়েছে। এ জন্য নিজের কাছে ভাল লাগছে। বিয়ের স্বাক্ষী(উকিল বাবা) হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। তাদের যে কোন রকমের সমস্যা আমি দেখার চেষ্টা করবো।