আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। সময়ের সাথে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য আমাদের শিশু শিক্ষার্থীদের একুশ শতকের দক্ষতায় দক্ষ করে তুলতে হবে। ২১ শতকের দক্ষতাগুলো যেমন- জটিল চিন্তা ও সমস্যা সমাধান, সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী ক্ষমতা, সহযোগিতামূলক ও দলগত দক্ষতা, নৈতিকতা ও সহমর্মিতা, সক্রিয়তা নিয়ে আরও ভাবতে হবে। বর্তমানে এ দক্ষতাগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।আগামীর সম্ভাবনাগুলো নিরূপন করে শিক্ষার্থীদের দিয়ে দক্ষতাগুলোকে কার্যকরী করে তুলতে হবে। এই সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জটিল চিন্তা করা এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা। শিক্ষার্থীরা এই দক্ষতা কাজে লাগিয়ে আগামীর সময়কে খুব সহজে মোকাবেলা করতে পারবে।করোনা মহামারী কেটে গিয়ে একদিন স্কুলগুলো নিশ্চয়ই খুলবে। প্রানচঞ্চল হবে প্রতিষ্ঠানগুলো। শিশুরা ফিরবে পাঠদানে। অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা কিছুটা হলেও স্বস্থিতে পরিনত হবে। কেননা বাংলাদেশে শিশু শিক্ষা অনেকাংশেই নির্ভর করছে প্রাক- প্রাথমিক, প্রাথমিক এবং জুনিয়র স্কুলিং শিক্ষার উপর। শিশুদের মেধার বিকাশ, স্কুলিং, ড্রপ আউট, অফলাইন-অনলাইন শিক্ষার বৈষম্য হ্রাস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা ইত্যাদি বিষয় গুলো শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক এবং শিক্ষায় উদ্ভাবনীয় ব্যক্তিদের নিকট এক অনন্য প্রশ্ন হয়ে দাড়িয়েছে?
করোনা মহামারী ভাইরাসের প্রভাবে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার নির্দেশ আসে ১৭ মার্চ তারিখে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিশু শিক্ষাসহ
দেশের সকল স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থা। অনিশ্চায়তায় রয়েছে লক্ষ্য শিশুর শিক্ষা বিকর্ষতারও। BDRC এর মতে ৫১.৩ মিলিয়ন ( বয়স ০-১৪) শিশুর বসবাস বাংলাদেশে। যেখানে ২৪.৯ মিলিয়ন মেয়ে শিশু এবং ২৬.৪ মিলিয়ন ছেলে শিশু। ২০১৯ সালে মোট শিশু শিক্ষার্থী ( গ্রেড ১-৫) ১৬৩৫৬০৯৬ যার মধ্যে মেয়ে শিশু শিক্ষার্থী ৮২৬০২০৪ এবং ছেলে শিশু শিক্ষার্থী ৮০৭৫৮৯২ ভর্তি রয়েছে (সূত্র ঃ DPE)।শিশু শিক্ষার্থী প্রসারে সরকারের ভিন্ন ভিন্ন উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখলেও ধোয়াশা রয়েছে স্কুল খোলা এবং করোনা পরবর্তী শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে।
স্কুল বন্ধের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইউনেস্কো দূরুত্ব শিক্ষার প্রোগ্রামগুলির ব্যবহার এবং শিক্ষার সীমাবদ্ধতা দূর করবে ব্যবহারযোগ্য শিক্ষামূলক এপ্লিকেশন এবং প্লাটফর্ম গুলোর খোলার সুপারিশ করেছে।
ইউনেস্কো সহ সকল বিশেষজ্ঞদের মতে করোনা পরবর্তী শিশু শিক্ষা যেমন হওয়া উচিতঃ
১. গতানুগতিক কারিকুলামকে পরিবর্তন করে কমিউনিটি বেইজড বা ক্রাউড সোর্স কারিকুলাম করা
২. যুগউপযোগী এডুকেশনাল রিসোর্সের ব্যবস্থা করা। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে অনলাইন শিক্ষার পাশাপাশি অনলাইন শিক্ষার জন্য ইন্টারনেট, কম্পিউটারসহ দূরুত্ব শিক্ষার রিসোর্সের ব্যবস্থা।
৩. মনস্তাত্ত্বিক শিক্ষা কে আরো কার্যকর করা।
৪. হোম স্কুলিংয়ের মাধ্যমে বাসায় গিয়ে হাতে কলমে শিক্ষাদান
৫. চাকরির সাথে সামঞ্জস্য চোখে পড়াশোনার কারিকুলাম ঠিক করা
৬. জিপিএ ভিত্তিক পড়াশোনা না করিয়ে মেধার বিকাশে পরিচর্যা করানো
৭. বৈষম্য কমাতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকের নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা
৮. গবেষণা ও ট্রেনিংমুখী শিক্ষাকরন
৯. পাবলিক প্রাইভেট অংশীদারত্ব শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া
১০. প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।
লেখক : মো: শরিফ উদ্দীন
শিক্ষার্থী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়