ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের পুরুরা সাধুরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে, কিন্তু বিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য রাস্তা নেই। বিদ্যালয়ের চারপাশে ফসলি জমির সমারোহ থাকলেও বিদ্যালয়ে প্রবেশে রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে পুরুরা গ্রামে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, চারপাশে ফসলের ক্ষেত। মাঝখানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। ফসলের ক্ষেতের আইল দিয়ে যাতায়াত করতে হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। যেখানে সামান্য বৃষ্টি আর বর্ষায় যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়।
এই বিদ্যালয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা এতটাই নাজুক যার কারনে বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থী সংকটে রয়েছে। এই ভাবে ছাত্রছাত্রী কমতে থাকায় শিক্ষিত মহল উদ্বিগ্ন।
প্রায় দুই শতাধিক কোমলমতি শিশুর পাঠদানের বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ মোট শিক্ষক চারজন। অভিভাবকরা বলছেন, যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না থাকায় বিদ্যালয়টি দিন দিন শিক্ষার্থী সংকটে পড়ছে। সেইসঙ্গে যেসব শিক্ষার্থী আছে তারাও এখানে পড়তে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে, এতে পাঠদানও ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয় কয়েকজন বলেন, ৫৬ বছররের পুরনো একটি সরকারি বিদ্যালয়ে যাতায়াতের কোন রাস্তা নেই এটি সত্যি আমাদের মর্মাহত করে। এখানকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অনেকবার আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নী। তবে অপর এক সুত্রে জানা গেছে, রাস্তার জায়গা একাধিক ব্যাক্তি মালিকানা হওয়ায় রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নিচ্ছন না কেউই, তাই আমরা সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি এবং সরকারের কাছে স্কুলে যাতায়াতের জন্য একটি রাস্তা নির্মাণের দাবি জানাই।
বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. ইদ্রিস মোল্যা বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে জরুরি ভিত্তিতে রাস্তা নির্মাণ করা প্রয়োজন। তিনি আরও জানান, ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার নিকট স্কুলের রাস্তা নির্মাণের জন্য লিখিত ভাবে আবেদন করলে সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ দিলেও তা আজও আলোর মুখ দেখেনি।
প্রধান শিক্ষক শামসুল হক বলেন, ১৯৬৪ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। সরকারীকরণ হয় ২০১৩-১৪ অর্থ সালে। সে সময় শিক্ষার্থী সংখ্যা দেখানো হয়েছিল দেড় শতাধিক। ৫৬ বছরেরও অধিক সময় ধরে নির্মিত বিদ্যালয়টিতে যাতায়াতের জন্য রাস্তা না থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি দিন দিন কমে যাচ্ছে।
বিদ্যালয়ের এমন দুরবস্থার বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহি অফিসার মোহাম্মদ হাসিব সরকার বলেন, বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের দুরবস্থার বিষয়টি জেনেছি যত দ্রুত সম্ভব বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।