মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার যমুনার পাড়ে দুর্গম চরে দীর্ঘ দিন ঝুলে থাকা গ্রেফতার পরোয়ানা ভুক্ত প্রায় দুই শতাধিক আসামীর জামিনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন থানা পুলিশ। মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশের উদ্যোগে শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফিরোজ কবির এ চরাঞ্চলের এ সকল আসামীদের সাথে সমন্বয় করে চলতি সাপ্তাহে আদালতে আত্মসমপর্ণের ব্যবস্থা করেন। গত রবিবার থেকে এ পর্য়ন্ত প্রায় বিশজন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ।ভবিষ্যতে অবৈধ্য কাজের সাথে জড়িত না হবার শর্তে পুলিশ এ জামিনের ব্যবস্থার উদ্যোগ নেন। পুলিশের এমন উদ্যোগে স্থানীয় চরবাসির মাঝে প্রশংসায় ভাসছেন।
জানা গেছে, উপজেলার এ চরাঞ্চলের চার পাশ দিয়ে পদ্মা-যমুনা বেষ্টিত।দুর্গম এলাকা হওযায় অঞ্চলটি অনেকাংশে মুল জনপদ থেকে বিছিন্ন। এখানে প্রায় ত্রিশ হাজার লোকের বসবাস। নদী ভাঙ্গণ আর অন্যত্র চরে নতুন বসতি স্থাপন করা এখানাকার জনবসতির নিত্যনৈমত্তিক বিষয় হয়ে দঁাড়িয়েছে। নদীতে মাছ ধরা আর পশু পালন করে মুলত এরা জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। একটা সময় এ চরের জমি দখল আর গোত্রে গোত্রে প্রভাব বিস্তার করার জন্য নিজেদের মধ্যে মরামারিতে লিপ্ত থাকতো । এসকল ঘটনায় দায়েরকৃত মামালার আসামীরা প্রায় দুই যুগ ধরে গ্রেফতারী পরোয়ানা দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না পুলিশ অভিযান করে তেমন সুবিধা করতে পারছিল না। মাঝে মাঝে দুই-চার জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হলেও বেশির ভাগ আসামী ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিল। সাম্প্রতিক মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম বিষয়টি নিয়ে আদালতের সাথে সমন্বয় করে জামিন যোগ্য পরোয়ানা ভুক্ত আসামীদের জামিনের ব্যবস্থা করে দেন। এ ধারাবাহিকতায় শিবালয় থানায় ওসি চরবাসিদের সাথে বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফা মতবিনিময় করেন। পরে তিনি এক পর্যায়ে স্থানীয়দের সাথে নিয়ে আসামীদের বুঝাতে সক্ষম হন।
শিবালয় থানায় ওসি, ফিরোজ কবির জানান,সাম্প্রতিক ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি স্যার ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এ চরাঞ্চলে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ে মতবিনিময় সভা করেন। ডিআইজি ও এসপি স্যারের নির্দেশে আমি কয়েক দফা তাদের সাথে মিটিং করে জামিন যোগ্যে মামলা গুলোর জামিনের ব্যবস্থা করি।বিষয়টি ভুক্তভোগীরাও সারা দেয়। ইতিমধ্যে বিশজনকে আদালতে আত্মসর্মপণ করাতে সক্ষম হয়েছি। বাকিরা থানায় যোগায়োগ করছে। পর্যয়াক্রমে সবাইকে চলতি সাপ্তহে আদালতে হাজির করা হবে।
মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম কালের কণ্ঠকে বলেন,দীর্ঘ দিন যাবৎ চরাঞ্চলের গ্রেফতার পরোয়ানা ভুক্ত আসামীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছিল না। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ এবং অন্য পালিয়ে থাকার কারনে মাঝে মাঝে পুলিশ দুই-চারজনকে আটক করতে সক্ষম হলেও বেশির ভাগ আসামী পলাতক ছিল। পরে বিষয়টি নিয়ে আদালতের সাথে সমন্বনয় করে জামিন যোগ্যে মামলার আসামীদের কোর্টে হাজির করার ব্যবস্থা করা হয়। ইতিমধ্যে আসামীরা বিষয়টি সারা দিয়েছে। বাকিদের আদালতে আত্মসমর্পণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
চরাঞ্চলের স্থানীয় মেম্বার মজনু শেখ জানান, আমাদের চরের বেশির ভাগ লোক অশিক্ষিত । দীর্ঘ দিন তাদের বিরুদ্ধে ঝুলে থাকা গ্রেফতারী পরোয়ানা নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। কোর্টে হাজির হতে সাহস পাচ্ছিল না। পরে ওসি স্যার বিষয়টি নিয়ে আমাদের সাথে আলোচনা করেন। আমি লোকজনদের সাথে করে ওসি স্যারের মাধ্যমে আদালতে যাই। বাকিরা এই সাপ্তহে হাজির হবে। আমাদের চরবাসির জন্য ওসি স্যার অনেক কষ্ট করেছেন। #