আইনের তোয়াক্কা না করেই কেটে নিচ্ছে ফসলি জমির টপ সয়েল

মানিকগঞ্জের ঘিওরে চিহিৃত ভূমিদস্যুদের দাপটে অসহায় হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী।  জোর পূর্বক ফসলি জমির উপর দিয়ে ফসল নষ্ট করে ট্রাক চলাচল করাচ্ছে। ক্ষমতাসীন ভূমি দস্যুদের দাপটে মামলা-হামলার ভয়ে কেউ কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না। সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও কার্যকরী আইনের তোয়াক্কা না করেই ওই সব জমির মাটি কেটে ৮/১০ ফুট গভীর গর্ত করা হচ্ছে। এতে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে আশপাশের জমিগুলো। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমির টপ সয়েল।

সেই সাথে উপজেলার আবাদী জমিতে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে পুকুর খনন। জোতদার কৃষক থেকে শুরু করে প্রান্তিক কৃষকরাও ঝুঁকছে পুকুর তৈরির দিকে। একের পর এক খনন করা পুকুরে গিলে খাচ্ছে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। এতে পরিবেশ ভারসাম্য বিনষ্টের পাশাপাশি শস্য উৎপাদন হ্রাসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।  প্রভাবশালী ব্যক্তিরা স্থানীয় প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মচারীর সহযোগীতায় এ ভাবে মাটি বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা, এমনকি এ বিষয়ে এলাকাবাসীর কোন অভিযোগ আমলে নিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন। এমন অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্থ ভূমি মালিকদের। ফলে কোন সুফল পাচ্ছেনা ভূক্তভোগী কৃষকরা।

সম্প্রতি সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে পুরাতন ধলেশ্বরী, ইছামতি নদী ও  ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি ও পুকুর তৈরি করছে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতারা। ধলেশ্বরী নদীর ঘিওর সদর কুস্তা শশ্মন ঘাট এলাকায় রাতের আঁধারে মাটি কেটে অবাধে বিক্রি করছে। পয়লা ইউনিয়নের বাইলজুরি পশ্চিম পাশে ধলেশ্বরী নদীতে ও  পয়লা বিলে ফসলী জমি কেটে পুকুর তৈরি করছে মাটি ব্যবসায়ী আরশেদ আলী, শরিফ, আরিফ। তারা প্রতিদিন প্রকাশ্যে মাটি কেটে বিক্রি করছেন। বড়টিয়া ইউনিয়নের করজনা এলাকার পুলিশ সদস্য মোঃ খন্দকার ইদ্রিস পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ইছামতি নদী খনননের জমাকৃত নদীর পাড়ের মাটি ভেকু দিয়ে কেটে তাদের জমি ভরাট করছে। কেটে নেওয়া এসব মাটির বেশির ভাগ মাটি যাচ্ছে ভিটে বাড়ি ভরাটে। ক্ষতি হচ্ছে চলাচলের রাস্তা-ঘাট, ফসলি জমির।

এ বিষয়ে স্থানীয়রা বারবার নিষেধ করলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। মহামারি করোনা ভাইরাস ও দ্বিতীয় দফায় বষার্র পানির কারনে ফসল আবাদ করতে দেরি হওয়ায় ক্ষতি হচ্ছে কৃষকদের। প্রায় এক মাস ধরে প্রকাশ্যে দিনের বেলায় ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটা হলেও কার্যকর কোনো ভূমিকা পালন করছে না স্থানীয় প্রশাসন, এমন অভিযোগ কৃষকদের।

এ ব্যাপারে একাধিক ভেকু ও অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আমরা উপজেলা প্রশাসন, সরকারী দলীয় নেতা ও সাংবাদিকদের ম্যানেজ করেই মাটি কাটছি।

ঘিওর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আইরিন আক্তার জানান, আমরা মোবাইল কোর্ট করে এপর্যন্ত অনেককেই জরিমানা করেছি। এবিষয়ে আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। দ্রুতই ভূমি দস্যু ও অবৈধ মাটি উত্তোলন কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

#

 

Facebook Comments Box
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225
  • Untitled post 11155
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225