মানিকগঞ্জের ঘিওরে ধলেশ্বরী নদীর খননকৃত বালু কৃষি জমিতে ফেলার ফলে ফসলী জমি নষ্ট হওয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে কৃষকরা। আজ সকালে মানিকগঞ্জ ঘিওর সড়ক অবোরধ করে বিক্ষোব কর্মসচী পালন করেছে ভুক্তভোগী কৃষক ও এলাকাবাসী। খননকৃত বালু ফাঁকা জায়গায় ডাম্পিংয়ের সিদ্ধান্ত থাকলেও তা নাকরে কৃষি জমির পাশে ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়।
গত দুইদিন যাবত রাতের আধারে নদী থেকে উচ্চমাত্রার খননযন্ত্র দিয়ে বালু ফেলার ফলে বাঁধ ভেঙে বালুমিশ্রিত পানি কৃষিজমি প্লাবিত হয়ে গেছে। ফলে বিস্তীর্ণ আবাদি জমির পেঁয়াজ, সরিষা, আলু সহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। এছাড়াও নদী থেকে ওই বালু ফেলার পাইপ রাস্তার উপরে দিয়ে বসানোর ফলে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। যার দরুন শুক্রবার সকালে ভুক্তভোগী কৃষকরা ও দুই শতাধিক এলাকাবাসী রাস্তা উপর কাঠের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। তাদের দাবি, কৃষি জমিতে বালু ফেলা বন্ধ এবং রাস্তার প্রতিবন্ধকতা পাইপ লাইন উঠিয়ে ফেলতে হবে।
প্রকল্প এলাকায় ড্রেজারে উত্তোলিত বালি স্থানীয় সরকারি খাসজমিতে রাখার কথা থাকলেও উত্তোলিত বালি অপরিকল্পিতভাবে কৃষকদের ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে ফেলার কারণে জমির ফসল বালিচাপা পড়ে নষ্ট হচ্ছে। কৃষি জমিতে বালু ফেলা বন্ধ করতে হবে।
ভুক্তভোগী একাধিক কৃষক জানান, নদী খননে তাদের উপকারের চেয়ে এখন অপকারই হচ্ছে বেশি। খোদ স্থানীয় প্রশাসনও স্বীকার করেছে, নদীভাঙন ও কৃষকদের ক্ষতির কথা। উপজেলার পূর্বঘিওর এলাকায় ধলেশ্বরী নদী থেকে বালু তুলে তা প্রায় আধাকিলোমিটার দূরে কয়েক একর ফসলি জমিতে ফেলা হচ্ছে। ফলে নির্দিষ্ট স্থান ছাড়িয়ে বালু ও পানি আশপাশের কৃষি জমিতে গিয়ে পড়ছে। আবাদি ফসলি কৃষি জমিতে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক। এসব বালু ও তার সঙ্গে আসা পানিতে পার্শ্ববর্তী ১৫০ বিঘা থেকে ২০০ বিঘা কৃষি জমিতে বালু ভরাট ও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সেই জমির আবাদকৃত শরিষা,আলু, পিয়াজ, ইত্যাদি ফসল নষ্ট হওয়ায় ফুসে উঠেছে কৃষক।
জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ নৌপথের ৫৩টি রুটে ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্পের আওতায় জেলা সদরের পুটাইল থেকে ঘিওর উপজেলা সদর পর্যন্ত কালীগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদীর প্রায় ৩০ কিলোমিটার খনন করা হচ্ছে। ১৯ লাখ ঘনমিটার বালু অপসারণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭ কোটি টাকা। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) তত্ত্বাবধানে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
বালু ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ঘিওর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম টুটুল বলেন, ঘিওর পূর্বপাড়া কবরস্থান এসব বালু আশপাশের কৃষি জমিতে ছড়িয়ে যাওয়ায় ভুক্তভোগী কৃষকরা বাধা দেন। এরপর সেখানে বালু ফেলা বন্ধ রাখা হয়েছে।
ঘিওর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। পরে পুলিশ এসে পরিবেশ নিয়ন্ত্রনে এনে পাইপসহ কাঠের গুড়ি রাস্তার উপর থেকে সড়িয়ে ফেলে পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। এবং বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কে জানিয়েছি।
ঘিওর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আইরিন আক্তার বলেন,আমাদের প্রাথমিক ধারনা কে বা কাহারা রাতের আধারে বাধঁ ভেঙ্গে দিয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিআইডব্লিউটিএর কর্মকতার্দের বলা হয়েছে। তারা আসলেই দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ক্ষতি পূরন না দেওয়া পযন্র্Í বালু উত্তোলন বন্ধ থাকবে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, সকালে ইউএনও ফোন দিয়েছিল। আমি বলেছি নদী কাটা বন্ধ করে দেন পারলে ওরা বিল উঠিয়ে নিয়ে যাক। এ জামেলা আর নিতে পারছিনা। ঠিকাদাররা যে বাঁধ দেয় সেই বাধঁই ভেঙ্গে যায় কেমন বাধঁ দেয় তারা। যেভাবে পারেন কৃষকদের ক্ষতি পূরনের ব্যবস্থা করেন।