, , , ,

তালতলীতে পাকা ঘরের স্বপ্ন পূরণ হলো কামালের

স্টাফ রিপোর্টারঃ 

অভাব অনাটনের কারনে কামাল হোসেন (৪০) কখনও স্কুলে যাননি। বড় হয়ে অভাবের মধ্যেই কাটছিল তার সংসার। কিন্তু কামালের একটি স্বপ্ন ছিল পাকা ঘরের বাবার পরিবারে কখনও সুখের মুখ দেখতে পারেনি। এরই মধ্যে কামাল মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। নিজের এ স্বপ্ন পুরনতো দুরের কথা দু-মুঠো ভাত খেয়ে বেচে থাকার ভাবনা পরিবারের সকলের। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে কামাল ঘরে বসেই থাকতেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় সেমি পাকা ঘর পেয়েছেন কামাল। এই স্বপ্ন পূরণ হওয়াতে তিনি বেশ খুশি। 

 

জানা গেছে, এক সময় কামাল জীবিকার সন্ধানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়াতেন। হঠাৎ ভারসাম্য হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেও টাকার অভাবে তার পরিবাররা এখন চিকিৎসায় নিতে পারছেন না এদিকে পরিবারের সদস্যসহ থাকতেন মাটির ঘরে। বর্ষায় ঘরের চালের ছিদ্র দিয়ে আসা বৃষ্টির পানিতে পরিবারের সদস্যদের কষ্ট হতো। বর্তমানে তার সংসারে একমাত্র উপার্জন সক্ষম ব্যক্তি ছেলে সজিব (২২) তার উপরই সংসারের দায়িত্ব। 

 

সুত্রটি আরও জানায়, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বরগুনার তালতলী উপজেলায় এক কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০০ পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় দুই কক্ষবিশিষ্ট সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে জমি, ঘর পেয়ে বেশ খুশি তারা। এসব ঘরের কাজের মান অনেক সুন্দর হয়েছে বলেও জানান ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। তবে ভিন্ন আশায় বুক বাধলেন মানসিক প্রতিবন্ধী কামাল। তার এটাই স্বপ্ন ছিল জীবনের শেষ বয়সে একটি পাকা ঘর তুলবেন। সংসারের অভাবঅনাটন শারীরিক অসক্ষমতার কারণে পাকা ঘরের স্বপ্ন শেষ হয় কামালের। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর উপহারের তালিকায় তার নাম থাকবে এটা তিনি জানতেনই না। বাড়িতে ইট, বালু, সিমেন্ট আসতে দেখলে অবাক হয়ে যান তিনি। সেমিপাকা ঘরের কাজ শুরু হওয়ার কথা তাকে জানানো হয়। তাকে বলা হয় আপনি প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে সেমিপাকা ঘর পেয়েছেন। তখন তিনি খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়েন। স্বপ্ন পূরণ হলো তার। ঘরের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরে বসবাস শুরু করেন তিনি। উপজেলায় এমন অনেকই আছেন ছোট ঝুপড়ি ছেড়ে পাকা ঘরে বসবাস করছেন এখন। ফলে বদলে গেছে সেই ঝুপড়ি ঘরে থাকা মানুষ গুলোর জীবনমানও। তালতলী উপজেলার কয়েকটি ঘর ঘুরে দেখা যায় অধিকাংশ পরিবারই বসবাস শুরু করেছেন। ঘরের কাজের মান অনেক ভালো হওয়াতে খুশি তারা। কামালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি ঘরের সামনেই বসে ছিলেন। সময় তিনি জানানপ্রধানমন্ত্রীর দেওয়া পাকা ঘরে অনেক ভালো আছি আল্লাহ্র রহমতে। এভাবেই প্রতিটি পরিবার সন্তোষ প্রকাশ করেন। 

 

কালামের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার স্বামী আগে ভালোই ছিলেন। তিন বছর আগে তিনি মানসিক ভারসম্য হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু তার স্বপ্ন ছিল শেষ বয়সে একটি পাকা ঘর করে ভালোভাবে বসবাস করবেন। তার সেই আশা কখনও পূরণ হবে এটা কল্পনাও করিনি। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই স্বপ্ন পূরণ করে দিয়েছেন।প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের তালিকায় আমাদের নাম রেখেছেন তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান। আমরা এই স্যারের জন্য দোয়া করি। বিশেষকরে দোয়া করি আল্লাহ যেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হায়াতদারাজ করেন। আল্লাহ তাকে সুস্থ রেখে সুন্দরভাবে দেশ পরিচালনা করার সুযোগ করে দেন। 

 

উপজেলা নিবার্হী অফিসারের নিয়োগ করা ঠিকাদার মো. ফয়সাল হোসেন নয়ন বলেন, প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে কাজ শুরু করার প্রথম দিকে স্থানীয়ভাবে কিছুটা সমস্যা হয়। তবুও ঘরের গুণগত মান ঠিক রেখে প্রতিটি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। অধিকাংশ ঘরই হস্তান্তর করা হয়েছে। 

 

তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো ভূমিহীন গৃহহীনদের একটি স্বপ্নের নীড়। তাদের এই স্বপ্নের নীড় বাস্তবায়নের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। শত প্রতিকূলতার মধ্যেদিয়েও ঘরগুলো নির্মাণে সফল হয়েছে। ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষ যাতে ঘরগুলো ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারে সেটা নিশ্চিত করা হবে।

Facebook Comments Box
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225
  • Untitled post 11155
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225