বিশেষ প্রতিবেদক, বরগুনাঃ
বরগুনার বেতাগী উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের জন্য ১০ টাকার চাল
প্রাপ্তদের তালিকা তৈরিসহ চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
স্বজনপ্রীতি করে দরিদ্রদের এই তালিকায় এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অন্তর্ভুক্ত
করেছেন তার ছেলের নাম। এছাড়াও প্রতিটি ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা
কেজি দরের চালের সুবিধাভোগীদের তালিকায় রয়েছে জনপ্রতিনিধিদের পছন্দের ব্যক্তি,
দলীয় লোক, প্রভাবশালী ও ধনাঢ্য ব্যক্তিরা।
সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় হতদরিদ্র সুবিধাভোগীদের ১০ টাকা কেজি
দরে চাল দিচ্ছে। একটি হতদরিদ্র পরিবার প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল পাবে। কিন্তু
বেতাগী সদর ইউনিয়নের সুবিধাভোগী হতদরিদ্রদের তালিকায় রয়েছে বর্তমান চেয়ারম্যান
মো. হুমায়ূন কবির-এর ছেলের নাম। তালিকার ১০ নম্বর ক্রমিকে চেয়ারম্যান তার
পুত্র মো. গোলাম শাহরিয়ার মনির-এর নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। তালিকায় নামের পাশে
পেশা হিসেবে দিনমজুর উল্লেখ করা চেয়ারম্যানপুত্র মো. গোলাম শাহরিয়ার মনির
বেতাগী সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, বেতাগী সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান
প্রকৃত দরিদ্র ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে তার পছন্দের ব্যক্তি, আত্মীয়-স্বজন ও
ধনাঢ্য ব্যক্তিদের নাম খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
তালিকায় নাম থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যানপুত্র মো. গোলাম শাহরিয়ার মনির
বলেন, আমার কোনো ইনকাম নেই। এটা প্রধানমন্ত্রীর একটা খাদ্য কর্মসূচি। এ জায়গায়
যে কারো নাম থাকতে পারে। আমার চেয়ে বড় বড় ফ্যামিলির নামও এই জায়গায় আছে।
সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. হুমায়ূন কবির বলেন, আমার ছেলে একজন দিনমজুরের জন্য
নামটি লিখিয়েছে। পরে সে নামটি আরেক জনকে দিয়ে দিয়েছে।
ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের কর্মী হিসেবে তার ছেলে কার্ডধারী চাল পেতে পারেও বলে
মন্তব্য করেন তিনি।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সুহৃদ সাহেলহীন বলেন, সরকারের
খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চালের নামের তালিকায় স্বজনপ্রীতির কোনো সুযোগ নেই।
তদন্ত সাপেক্ষে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।