মোঘল সুমন শাফকাত, বানারীপাড়াঃ
বৈশ্বিক কোভিড-১৯ এর তৃতীয় ঢেউয়ের ছোবল থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে সরকার যখন দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করেছে। ঠিক সেই সময়ে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের মসজিদবাড়ি ডিএস আলিম মাদরাসার নূরাণী বিভাগ খোলা রেখে ক্লাস চলছিলো। তবে নিভে গেলো একটি ভবিষ্যতের আলোক বর্তিকা। মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) ক্লাসে এসে আর বাড়িতে ফেরা হলোনা ওই মাদরাসার নূরাণী বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আব্দুল্লাহর (৭)। সে মসজিদবাড়ি গ্রামের মো. জিহাদ সিকদারের ছেলে। পিতা মাতা দুজনেই সংসারের জীবিকার তাড়নায় রাজধানী শহর ঢাকায় থাকেন। আব্দুলাহ দাদা বাড়িতে থেকে মাদরাসায় লেখাপড়া করতো। তার দাদার নাম মো. হারুন সিকদার। দাদাই সকালে প্রিয় নাতিকে হাত ধরে মাদরাসায় দিয়ে এসেছিলেন বলে প্রতক্ষদর্শীরা জানান। স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে আব্দুল্লাহ সকালে মাদরাসায় গিয়ে তার এক সহপাঠির সাথে খেলতে ছিলো। এ সময় তার হাতে থাকা কোন এক বস্তুর মধ্যে পানি নিতে মাদরাসা লাগোয়া পুকুর ঘাটে নেমে পড়ে যায়। তার সাথে থাকা সহপাঠি তখন কিছু বুঝতে পারেনি। পরে সে ডাকচিৎকার করলে মাদরাসার এমএলএসএস মো. এবাদুল হক সিকদার এসে পুকুর থেকে আব্দুল্লাহকে উদ্ধার করে বানারীপাড়া উপজেলা ৫০ শয্যা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুল্লাহকে মৃত ঘোষনা করেন। আব্দুল্লাহকে তার নিজ এলাকায় নিয়ে আসলে সেখানে এক হৃদয় বিদারক অবস্থার সৃষ্টি হয়। এদিকে সন্তানের মৃত্যু খবর পেয়ে আব্দুল্লাহর পিতা-মাতা ঢাকা থেকে রওয়ানা দিয়েছেন বলে এলাকাবাসী জানান। তবে এমএলএসএস এবাদুলের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় সে কিভাবে শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহকে পুকুর থেকে উদ্ধার করেছে তা জানা যায়নি। এ বিষয়ে মসজিদবাড়ি ডিএস আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আতোয়ার রহমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার বিষয়ে কোন প্রকার সদুত্তর দিতে পারেননি। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. পনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা জানিয়ে বলেন, সরকারি ঘোষণার পরেই ওই প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিলো। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আব্দুল্লাহর দাফন সম্পন্ন হয়নি। অপরদিকে সরজমিন দেখাগেছে মসজিদবাড়ি মাদরাসা ছাড়াও বানারীপাড়া উপজেলায় অনেক মাদরাসার ক্যাডেট ও কিন্টার গার্ডেন স্কুলের ক্লাসের কার্যক্রম এবং কোচিং চালু রয়েছে। যেখানে কোন প্রকার স্বাস্থবিধি মানা হচ্ছেনা।