ফুলবাড়ীতে কর্মহীন নারী ও বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে ফাহিম প্যাকেজিং

মেহেদী হাসান উজ্জ্বল,ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় ফাহিম প্যাকেজিং কোম্পানি লিঃ গড়ে উঠায় এলাকার শতাধিক নারী পুরুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় ভারি শিল্প ও কলকারখানা গড়ে না ওঠায় এলাকার বেকার যুবকদের জীবন জীবিকার পথ থমকে গিয়েছিল। বর্তমানে গড়ে উঠা এই প্রতিষ্ঠানেটিতে প্রতিদিন কাজ করছে এলাকার শতাধিক নারী-পুরুষ।

এলাকার তরুন শিল্পপতি ও সমাজ সেবক মশিউর রহমান চলতি বছরে এলাকার লোকজনের কর্মসংস্থান গড়ে তোলার লক্ষে মুক্তারপুর গ্রামে, প্রায় ৩ একর জমির উপর ফাহিম প্যাকেজিং লিঃ নামে এই কারখানাটি গড়ে তোলেন। বর্তমান এই কারখানায় নারী পুরুষসহ প্রায় শতাধিক শিক্ষিত অশিক্ষিত বেকার যুবকরা কাজ করছেন। শ্রমিকরা এখানে কাজ করে যে আয় করছেন তা দিয়ে তাদের সংসারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে এবং ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরছ যোগাচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,ফুলবাড়ী উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের মোক্তারপুর গ্রামে ফুলবাড়ী-মাদিলা সড়কের পাশে এক মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠেছে ফাহিম প্যাকেজিং কোম্পানী লিঃ। সেখানে প্লাষ্টিকের সুতা থেকে তাঁত মেশিনে তৈরী হচ্ছে উন্নত মানের প্লাষ্টিকের বস্তা ও পলি ব্যাগ। এই তাঁত মেশিসে বস্তা ও প্যাকেট তৈরী করছে ওই এলাকার শতাধিক নারী-পুরুষ।

ফাহিম প্যাকেজিং কারখানার শ্রমিক কৃষ্ণপুর গ্রামের নাসরিন বেগম বলেন, তিনি এক সময় বাড়ীতে বসে ছিলেন,ফাহিম প্যাকেজিং কারখানার মালিক তাকে এক মাস সেলাই প্রশিক্ষন দিয়ে চাকুরি দিয়েছে, এখন তিনি এই কারখানায় ঘরের মধ্যে নিরাপদ পরিবেশে কাজ করে প্রতিমাসে সাত থেকে আট হাজার টাকা বেতন পান, এতেকরে তার সংসারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে।

একই কথা বলেন, পশ্চিম গৌরীপাড়া গ্রামের ঝর্না বেগম ও দক্ষিন বাসুদেবপুর সূর্য্যপাড়া গ্রামের ভালোরানী,কাটাবাড়ী গ্রামের লিমনসহ ফাহিম প্যাকেজিং কারখানায় কর্মরত মহিলা শ্রমিকরা। কর্মরত মহিলা শ্রকিরা বলেন,তাদের আয়ের টাকা সংসারের কাজে লাগিয়ে এখন সচ্ছলতা ফিরে এসেছে, তাদের সন্তানরা লেখাপড়া করছে।

ফাহিম প্যাকেজিং কোম্পানী লিঃ এর ম্যানেজার বাবলু মিয়া বলেন, ফাহিম প্যাকেজিং থেকে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ হাজার প্লাষ্টিক ব্যাগ ও বস্তা উৎপাদন হয়, উৎপাদিত ব্যাগ ও বস্তা দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়। তিনি বলেন, এই কারখানায় প্রতিদিন দুই শিপ্টে শতাধিক লোক কাজ করে, তারা সকলে এই এলাকার বাসীন্দা। তাদেরকে এক মাস করে প্রশিক্ষন দিয়ে এই কাজে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

ফুলবাড়ী ফাহিম প্যাকেজিং কোম্পানীর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান বলেন, এক সময় এই এলাকাটি অবহেলিত ছিল, এখানে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুললে,নিজের ব্যবস্যার পাশাপাশি এই এলাকার অনেক মানুষের কর্মস্থান সৃষ্টি হবে, এই চিন্তা থেকে তিনি এই ফাহিম প্যাকেজিং কারখানা গড়ে তুলেছেন।

তিনি বলেন, প্রথমে এই এলাকার দরিদ্র পরিবারের মহিলা পুরুষদের প্রশিক্ষন দিয়ে কাজের জন্য উপযুক্ত করেছেন নিজ অর্থ্যায়নে, এরপর এই কারখানায় চাকুরি দিয়েছেন। এতেকরে তিনি তাঁর নিজের কারখানায় স্থানীয় শ্রমিক পেয়েছেন অপরদিকে এই এলাকার কর্মহীন পরিবার গুলো কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে চলতি বছরে মোক্তারপুর মোড়ে ফাহিম প্যাকেজিং কারখানাটি চালু হওয়ায়, এই কারখানাকে কেন্দ্রকরে গড়ে উঠেছে দোকানপাট ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠান। কারখানায় আসা-যাওয়া করা ব্যাক্তিরাসহ কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা সেই দোকান পাটে খরছ করে থাকে, এতেকরে ওই এলাকায় বিকল্প কর্মস্থানও তৈরী হচ্ছে।

একই ভাবে শহরের পশ্চিমাংশে রাজারামপুর এলাকায় একাধিক শিল্পকারখানা গড়ে উঠায় সেখানেও বহু সংখ্যক মানুষের কর্মস্থান তৈরী হচ্ছে। এতেকরে এক সময়ের শুধুমাত্র কৃষিভিক্তি এলাকা এখন শিল্প এলাকা হিসেবে পরিচিত এখন নতুন নতুন উদ্যোগক্তার বদৌলতে এগিয়ে যাচ্ছে শিল্পায়নের পথ।

এলাকার সচেতন মহল বলছেন, যে এলাকায় যতবেশি শিল্পায়ন হবে সেই এলাকা তত বেশি উন্নায়নের পথে এগিয়ে যাবে,ঘরে বসে থাকা ব্যাকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে,এই জন্য ফাহিম প্যাকেজিং এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমানের মতো অনান্য উদ্যোগক্তাদের নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার আহবান জানান।

 

Facebook Comments Box
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225
  • Untitled post 11155
  • Untitled post 14630
  • Untitled post 14225