রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদের ২৮ দিন ও একই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজের ২১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার (২৬ জুলাই) ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত শুনানি শেষে দুজনের এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
দুজনই ১০ দিনের রিমান্ডে ছিলেন। সেই রিমান্ড শেষে সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় তিন ও উত্তরা পূর্ব থানায় প্রতারণার এক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ১০ দিন করে মোট ৪০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তাদের আদালতে হাজির করা হয়।
এ সময় তাদের রাখা হয় আদালতের হাজতখানায়। শুনানি শেষে চার মামলায় সাহেদের ২৮ দিন এবং তিন মামলায় মাসুদ পারভেজের ২১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গত ১৬ জুলাই সাহেদ-মাসুদ ও তরিকুলকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়ের করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তিনজনের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক এস এম গাফফার আলম।
অপরদিকে তাদের আইনজীবী নাজমুল হোসেন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে সাহেদ ও মাসুদের ১০ দিনের এবং তরিকুলের সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর হাকিম মো. জসিম।
গত ১৫ জুলাই ভোর ৫টা ২০ মিনিটে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর গ্রামের লবঙ্গবতী নদীর তীর সীমান্ত এলাকা থেকে সাহেদকে গ্রেফতার করে র্যাব। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সাহেদকে গ্রেফতারের বেশকিছু ছবি গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরমধ্যে একটি ছবিতে দেখা যায়, সাহেদের কোমরে একটি পিস্তল বাঁধা।
কোমরপুর সীমান্ত দিয়ে নৌকায় করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। এ সময় তিনি জিন্সের প্যান্ট ও নীল রঙের শার্টের ওপর কালো রঙের বোরকা পরে ছিলেন। সাহেদ গ্রেফতার এড়াতে গোঁফ কেটে ফেলেছিলেন, সাদা চুল কালো করেছিলেন। গ্রেফতারের পর সেখান থেকে হেলিকপ্টারে করে সাহেদকে ঢাকায় আনা হয়। এরপর উত্তরায় তাকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযান শেষে রিজেন্ট সাহেদের গ্রেফতার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব। এ সময় সাহেদের বিরুদ্ধে প্রতারণার কিছু অভিযোগ তুলে ধরেন এবং কীভাবে তাকে ধরা সম্ভব হল সেই বিস্তারিত তথ্য দেন র্যাবের ডিজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
প্রসঙ্গত, সরকারের সঙ্গে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে টাকার বিনিময়ে করোনাভাইরাস শনাক্তের নমুনা সংগ্রহ করা এবং ভুয়া সনদ দেয়ার অভিযোগ ৬ জুলাই র্যাব রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায়।
অভিযানে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম উঠে আসে। পরে রোগীদের সরিয়ে রিজেন্টের উত্তরা ও মিরপুর শাখা সিলগালা করে দেয়া হয়।
পরদিন উত্তরা পশ্চিম থানায় র্যাব বাদী হয়ে মো. সাহেদকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করে। সে মামলায় ৯ দিন পলাতক থাকার পর গ্রেফতার হন মো. সাহেদ।