করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন দেশের বহু মানুষ। তাদের সহায়তায় এগিয়েও এসেছে অনেক সংগঠন। ব্যক্তিগত উদ্যোগে সাহায্য করেছেন অনেক বিত্তশালীও। তবে এদের মধ্য থেকে আলোচনায় উঠে এসেছিলেন এক বৃদ্ধ ভিক্ষুক। বসতঘর ঠিক করার জন্য তিল তিল করে জমানো ১০ হাজার টাকা দান করেছিলেন সরকারি ত্রাণ তহবিলে। সেই বৃদ্ধ নাজিমউদ্দিন এবার উঠছেন প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া পাকা বাড়িতে।
আগামীকাল রোববার তার হতে বাড়িটির চাবি হস্তান্তর করবেন শেরপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও ঝিনাইগাতী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। আজ শনিবার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব (এপিএস) আশরাফ সিদ্দিকী বিটু।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। দিন আনে দিন খায়- এমন মানুষ কাজ না পাওয়ায় সন্তান-সন্ততি নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করতে থাকেন। এসব অসহায় মানুষকে সহায়তা করতেই নিজের জমানো ১০ হাজার টাকা স্থানীয় ইউএনও রুবেল মাহমুদের হাতে তুলে দেন ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গান্ধীগাঁও গ্রামের ইয়ার আলীর ছেলে নজিমুদ্দিন (৮০)।
বৃদ্ধ নাজিমউদ্দিন পথে পথে ঘুরে ভিক্ষা করে সংসার চালান। নিজের ভাঙ্গাচোরা ছনের ঘর ঠিক করার জন্য দুই বছর ধরে তিল তিল করে জমিয়েছিলেন ওই ১০ হাজার টাকা। কিন্তু কর্মহীন মানুষের কষ্ট দেখে ভুলে গিয়েছিলেন নিজের দুঃখ। সরকারি ত্রাণ তহবিলে দান করে দিয়েছিলেন পুরো টাকাটাই।
বৃদ্ধ নাজিমউদ্দিনের এই মহানুভবতা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সারাদেশে আলোচনার সৃষ্টি হয়। তার কথা জানতে পারেন প্রধানমন্ত্রীও। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃদ্ধ ভিক্ষুকের এমন দানকে ‘বিরল ঘটনাথ বলে মন্তব্য করেছিলেন। পাশাপাশি তাকে খাসজমি বন্দোবস্তসহ পাকা বাড়ি করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী খাসজমি বন্দোবস্ত করে পাকা বাড়ি নির্মাণের কাজ সম্প্রতি শেষ হয়েছে।
এ বিষয়ে আজ শনিবার ঝিনাইগাতীর ইউএনও রুবেল মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আসা নির্দেশনা অনুযায়ী পাকা বাড়ি নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। আগামীকাল আনুষ্ঠানিকভাবে বৃদ্ধ নাজিমুদ্দিনের হাতে বাড়িটির চাবি হস্তান্তর করা হবে।