টাকা নিয়ে গ্রাহককে সময় মতো চাহিদার পন্যটি না দেওয়াসহ নানা অভিযোগের ভিত্তিতে মানিকগঞ্জের সিংগাইরে ইভ্যালীর একটি শাখা থেকে ৩৯ লাখ নগদ টাকাসহ স্থানীয় ম্যানেজার ও দুই সহকর্মীকে আটক করা হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে পারিল বাজারে অবস্থিত ইভ্যালীর কার্যালয়ে এই অভিযানে নামেন সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুনা লায়লা।
আটককৃতরা হলেন ব্যবস্থাপক বিপ্লব মিয়া(২৫), সহকারী ব্যবস্থাপক ববিদুল ইসলাম(২৫)এবং জামাল (৩৮)। বিপ্লব মিয়া স্থানীয় বলধরা গ্রামের সুরুয মিয়ার ছেলে এবং ববিদুল ইসলাম পারিল গ্রামের ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে এবং জামাল পারিল নওধা গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুনা লায়লা জানান, ইভ্যালী নামের ওই প্রতিষ্ঠান বলধরা এলাকার পারিল বাজারে একটি অফিস বসিয়ে গ্রাহককে বেশি মুনাফার প্রলোভন ও বিভিন্ন পন্যের আকষর্নীয় অফার দিয়ে পন্য বিক্রি ও চাহিদাকৃত পন্য সময় মতো না দিয়ে গ্রাহকরে সাথে বেশ কয়েক মাস ধরে প্রতারণা করে আসছিল।
অভিযান চলাকালে এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেন, প্রতিষ্ঠানটি প্রতিদিন বিকাশ ও নগদে প্রায় এক থেকে দেড় কোটি টাকা গ্রহণ করে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির কোন ব্যাংক একাউন্ট নেই। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টাকা কালেকশন করে ব্যাগভর্তি করে ব্যবস্থাপক নিয়ে যান।
আটককৃতরা জানান, তারা ইভ্যালীর নামে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে মোবাইলে কিংবা অনলাইনে নানান ধরনের প্রোডাক্ট অর্ডার নেন। পরে তা গ্রাহকদের পৌঁছে দিয়ে থাকেন। কিন্তু এর আড়ালে ওই প্রতিষ্ঠানটি অল্প দিনে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিদিন বলধরা শাখায় এক থেকে দেড় কোটি টাকা বিকাশ ও নগদে গ্রহণ করে থাকতেন।
চার লাখ টাকা এখানে বিনিয়োগ করলে মাত্র পনেরো দিনে তাকে ৬ লাখ টাকা দেওয়া হবে বলে লোভ দেখায় মানিকগঞ্জে কর্মরত একজন সরকারি চাকুরীজীবীকে। কিন্তু নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই সরকারি কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির প্রলোভনের মাত্রা এতটাই বেশি ছিলো যে তা নিয়ে যে কোন সচেতন ব্যক্তির সন্দেহ হবে। এজন্য তিনি ইভ্যালীর প্রলোভন থেকে সরে এসছেন।
প্রতিষ্ঠানটির শাখার প্রধান হেনা আক্তার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে এই ভয়াবহ প্রতারণার ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিষয়টি জানলেও ইভ্যালী তাদের ম্যানেজ করেই এই অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুনা লায়লা জানান, আটককৃদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা হচ্ছে।